মে মাসের মধ্যেই নিজেদের প্রধান পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্র ধ্বংস করবে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ং-এর পক্ষ থেকে এমন প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সিউল। দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্টের দফতর ব্লু হাউজ জানায়, এ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরীয় বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি, বিদেশি গণমাধ্যমকেও আমন্ত্রণ জানাবে উত্তর কোরিয়া। এদিকে, কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে মে মাসেই উত্তর কোরীয় সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ঐতিহাসিক আন্তঃকোরীয় সম্মেলনে দক্ষিণ ও উত্তরের শীর্ষ দুই নেতার হৃদ্যতাপূর্ণ সাক্ষাতের রেশ লেগেছে দুই কোরিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যেও। শুক্রবারের সম্মেলনে ভোজপর্বে পরিবেশন করা উত্তর কোরিয়ার বিখ্যাত ঠাণ্ডা নুডুলসের জয়জয়কার এখন দক্ষিণ কোরিয়ার সব জায়গায়। এ খাবারের স্বাদ নিতে দক্ষিণ কোরীয়রা এখন ভিড় করছেন স্থানীয় খাবারের দোকানে। তাদের প্রত্যাশা খুব শিগগিরই দুই কোরিয়া আবার একত্রিত হবে।
এক দক্ষিণ কোরীয় বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা এবং আমাদের প্রেসিডেন্টকে যখন দেখলাম তারা ঠাণ্ডা নুডুলস খাচ্ছেন, তখন আমিও ঠিক করেছি আমাকেও এটা খেয়ে দেখতে হবে। দুই রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যকার সম্মেলন সত্যিকার অর্থেই আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।’
সম্মেলনরে দু’দিন পর দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যকার আলোচনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। রোববার দেশটির প্রেসিডেন্টের দফতর জানায়, সম্মেলনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আগামী মাসেই উত্তর কোরিয়ার প্রধান পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্র পুঙ্গ্যেরি ধ্বংস করে ফেলবে পিয়ংইয়ং। এছাড়া, উত্তর কোরিয়া তাদের সময় আধাঘণ্টা বাড়িয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য করবে বলেও জানানো হয়।
ব্লু হাউসের সিনিয়র সেক্রেটারি উন ইয়ং চ্যান বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধির উপস্থিতিতে মে মাসের মধ্যেই দেশটির প্রধান পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্র ধ্বংস করে ফেরা হবে।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন যদি প্রতিজ্ঞা করে যে, তারা আর কোনো উস্কানিমূলক আচরণ করবে না, তাহলে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রের কোনো প্রয়োজন নেই।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন। ব্লু হাউজ জানায়, দুই কোরিয়ার মধ্যকার সম্মলনের ফলাফলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ট্রাম্প। এর মধ্যেই কিমের সঙ্গে সামনের মাসে বৈঠকে বসার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প বলেন, ‘তিন চার সপ্তাহের মধ্যেই আমাদের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমি আগেও বলেছি, এ বিষয়ে ফলপ্রসূ কিছু না হলে আমি বৈঠক ত্যাগ করবো। আমি জন কেরির মতো ইরানের সঙ্গে করা ভয়াবহ চুক্তি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে করতে চাই না।’
এদিকে, উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে শান্তি চুক্তি হলে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সেনাবাহিনীর আদৌ প্রয়োজনীয় আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস জানিয়েছেন, এ বিষয়ে মিত্রসহ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবে যুক্তরাষ্ট্র