কুমিল্লার হত্যা ও নাশকতার দুই মামলায় ছয় মাসের জামিন পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আদালতের এ আদেশের ফলে খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বাধা নেই বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি বিএনপির যুগ্মমহাসচিব ও খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী।
২৮ মে, সোমবার খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতির কক্ষের সামনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
খালেদা জিয়াকে কুমিল্লার দুই মামলায় জামিনের আদেশ দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। নড়াইলের মানহানির মামলার জামিন আবেদনটি (নট প্রেস রিজেক্ট) উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এ মামলায় বিচারিক আদালতের পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে হাইকোর্টে আসতে বলা হয়েছে।
আদালত থেকে বেরিয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে অন্য মামলায় কাস্টডি ওয়ারেন্ট দেখালে তার মুক্তিতে বাধা নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান প্রিয়.কমকে বলেন, ‘কুমিল্লার দুই মামলায় ম্যাডামকে (খালেদা জিয়াকে) জামিন দিয়েছেন। নড়াইলের মামলায় জামিন আবেদনটি নট প্রেস রিজেক্ট করেছেন। নড়াইলের মামলাটি ছিল বেইলেবল। কুমিল্লার হত্যা ও নাশকতার মামলা দুটি ছিল নন বেইলেবল(জামিন অযোগ্য)মামলা।’
এর আগে ২০ মে, কুমিল্লা ও নড়াইলের তিন মামলায় জামিন চেয়ে আবেদন করেন খালেদা জিয়া।
গত ১৬ মে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন বহাল রাখে আপিল বিভাগ। তবে তার কারামুক্তির জন্য আরও ছয়টি মামলায় জামিন নিতে হবে। পাশাপাশি চারটি মামলায় হাজিরা পরোয়ানা প্রত্যাহারের প্রয়োজন রয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা গত বৃহস্পতিবার ঢাকার পৃথক আদালতে দুটি মানহানির মামলায় জামিনের আবেদন করেন। চারটি মামলায় হাজিরা পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন জানান।
আদালত শুধু নাইকো মামলায় হাজিরা পরোয়ানা প্রত্যাহার করেছে। বাকি আবেদনগুলোর বিষয়ে পরে আদেশ দেওয়া হবে উল্লেখ করে দিন ধার্য করা হয়েছে।
২০১৫ সালে অবরোধ চলাকালে ২ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ফলে সাতজন যাত্রীর মৃত্যু এবং আরও ২৫ থেকে ২৬ জন গুরুতর আহতের ঘটনায় একটি মামলা হয়। এ মামলার অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়ার নাম আসে।
একই বছরের ২৫ জানুয়ারি নাশকতার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলায়ও খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়।
বিচার চলাকালে এ দুটি মামলায় গত ২৩ এপ্রিল জামিন চেয়ে আবেদন জানালে ৭ জুন দিন ধার্য করা হয়। এ তারিখ এগিয়ে আনার আবেদন জানালে আদালত তা-ও খারিজ করে দেয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগে ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইলে মানহানির মামলা করে স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধার ছেলে রায়হান ফারুকি ইমাম। মামলাটি নড়াইলের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে বিচারাধীন। চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে তার আইনজীবীরা আবেদন করেন।
আদালতে বিলম্বে শুনানির দিন ধার্য থাকায় তিনটি মামলায় জামিন আবেদন দায়েরের জন্য রবিবার সকালে হাইকোর্টে অনুমতি চান খালেদার আইনজীবীরা। অনুমতি পেয়ে জামিনের আবেদন দাখিল করেন তারা।