ভারতের টি-টোয়েন্টি লীগে (আইপিএল) সাকিব আল হাসানের এটি ছিল সপ্তম মৌসুম। তবে এবারই আসরের সবগুলো ম্যাচে খেললেন সাকিব। রোববার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে ফাইনাল খেলে গতকালই দেশে ফিরেছেন। আগেও দুটি আসরে ফাইনাল খেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। কিন্তু তৃতীয় দফায় সেটি হয়নি। দলের হারের চাপা কষ্ট নিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে।তবে এসবই এখন ভুলে যেতে হবে। দেশের হয়ে এখন তার একটাই চিন্তা আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। সেটিও ভারতের মাটিতে। বিশ্রামের সুযোগ নেই। কালই দলের সঙ্গে ভারতের দেরাদুনে যেতে হবে। তার নেতৃত্বে ৩রা জুন থেকে শুরু হবে আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি লড়াই। একে তো টি-টোয়েন্টি তার উপর ভারতের মাটিতে। তাই বলার অপেক্ষা রাখে না সাকিবের আইপিএল অভিজ্ঞতা দারুণ কাজে দিবে টাইগারদের জন্য। তিনি নিজেও স্বীকার করে নিয়েছেন সেই কথা। বলতে গেলে সাকিবের আইপিএল অভিজ্ঞতায় লড়াই হবে রশিদ খানদের বিপক্ষে। সাকিব বলেন, ‘একই কন্ডিশন। একই জায়গায় (ভারত) খেলা হবে। তাই অবশ্যই আইপিএলের অভিজ্ঞতা কাজে আসবে। যদিও দেরাদুনে আমাদের কোনো ম্যাচ হয়নি। তারপরেও আমার মনে হয় একই হবে। ভারতে সাধারণত যে ধরনের উইকেট থাকে ওই ধরনেরই হবে। এই অভিজ্ঞতাটা অবশ্যই কাজে আসবে।’
ভারতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে যাওয়ার আগে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন আফগান লেগস্পিনার রশিদ খান। আফগান এ লেগিকে টাইগার ব্যাটসম্যানরা আতঙ্কই মনে করছেন। যদিও সাকিব তা মানতে নারাজ। তাই রশিদকে নিয়ে আলোচনার বিষয়টি তার সামনে প্রশ্ন হয়ে আসতে দিলেন ক্ষেপাটে উত্তর। পাত্তাই দিতে চাইলেন না রশিদকে। তিনি বলেন, ‘কারা আলোচনা করে? প্রশ্ন আপনারা করলে প্লেয়াররা উত্তর দিচ্ছে? নাকি প্লেয়াররা আলোচনা করছে? যাই হোক, ঠিক আছে। সবাই তো ভালো বোলার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যারা খেলেন সবাই ভালো বোলার। সো কেউ ভালো বল করবে কেউ খারাপ বল করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে ভালো ব্যাটসম্যানরা সেটাকে ভালোভাবে হ্যান্ডেল করবে। সাকিব যাই বলুন আফগানিস্তানের দুই লেগ স্পিনারকে নিয়ে উঠে আসছে নানা পরিকল্পনার কথা। বিশেষ করে রশিদকে নিয়ে। দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররাও অপেক্ষায় ছিলেন অধিনায়ক সাকিবের। কারণ তার সঙ্গেই হায়দরাবাদে ছিলেন রশিদ। কাছ থেকে সাকিব দেখেছেন তাকে। জানেন তার দুর্বলতা ও শক্তির জায়গাও। তাই টাইগার অধিনায়কের নিশ্চয় কোনো আলাদা পরিকল্পনা আছে? জবাবে সাকিব বলেন, ‘আপনারা করলে আলোচনা হবেই। আমি উত্তর দিলাম না, এখন আলোচনাও হলো না।’
যদিও সিরিজে র্যাঙ্কিংয়ের হিসেব অনুসারে আফগানদেরই সাকিব ফেভারিট মনে করছেন। আবার এও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, টি-টোয়েন্টিতে ছোট দল বড় দল বলে কিছু নেই। এমনকি কেউ নিজেকে ফেভারিট দাবিও করতে পারবে না বলে জানান সাকিব। তিনি বলেন, ‘আসলে টি-টোয়েন্টিতে ফেভারিট বা ফেভারিট না এই ধরনের কোনো তকমা থাকে না। যে কোনো দল যে কোনো সময় যে কাউকে হারাতে পারে। যেহেতু আফগানিস্তান আমাদের চাইতে দুই ধাপ এগিয়ে (র্যাঙ্কিংয়ে) সো আমি বলবো ওরাই ফেভারিট।’
অনেকের ধারণা সদ্য টেস্ট মর্যাদা পাওয়া আফগানদের বিপক্ষে টাইগাররা খেলবেন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। কিন্তু সাকিব সেটি নিয়ে এখনো কিছুই বলতে রাজি নয়। তিনি বলেন, ‘সব সময় সবজায়গাতে অ্যাটাক করাটা যে ঠিক হবে এটাও ঠিক না। অবশ্যই আমরা আলোচনা করবো। কোন জায়গায় কোনভাবে খেললে আমাদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে সেইভাবে চেষ্টা করবো।’ আজ সকালেই বাংলাদেশ দল ভারতের দেরাদুনের উদ্দেশে দেশ ছাড়বে। ১৬ সদস্যের দলে রয়েছে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের দারুণ সমন্বয়। এ দলে সাকিব ছাড়াও ভারতের আইপিএলে খেলার দারুণ অভিজ্ঞতা আছে পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের।