আসামে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক থাকা ৩৩ নাগরিককে ফেরত নিতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ। এসব মানুষকে আসামের বিভিন্ন বৈদেশিক ট্রাইবুনাল অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ঘোষণা করেছে। তারা বর্তমানে ওই রাজ্যটির বিভিন্ন বন্দিশিবিরে অবস্থান করছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এসব অনুপ্রবেশকারীকে ফেরত নিতে ঢাকার সিদ্ধান্তে দু’দেশের মধ্যে অমায়িক সম্পর্ক আরো নতুন মাত্রা পাবে এমনই নয়, একই সঙ্গে সিটিজেনশিপ (সংশোধিত) বিল, ২০১৬ এবং ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) নিয়ে যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তাতে পরিবর্তন আসবে। এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে ৩০ শে জুন।রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশে এর আগে বিএনপি সরকার ভারতের মাটিতে তার নাগরিকরা উপস্থিত আছে এ কথা প্রত্যাখ্যান করেছে। অতিরিক্ত ডিজিপি পল্লব ভট্টাচার্য্য বলেছেন, বাংলাদেশ শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। কারণ, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যাবর্তন অথবা দেশে ফেরত পাঠানো নিয়ে কোনো চুক্তিই নেই। তিনি আরো বলেন, গুয়াহাটিতে বর্তমানে বাংলাদেশের যে সহকারী হাই কমিশনার আছেন তিনি সম্প্রতি বন্দিশিবিরগুলো পরিদর্শন করেন এবং অভিযুক্ত অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। গত মাসে বিভিন্ন বন্দিশিবিরে ১৫২ জন নাগরিককে সনাক্ত করে বাংলাদেশ। এরপর তারা এসব মানুষকে ব্যাচ করে দেশে ফেরত পাঠাতে লিখিত আবেদন করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। পল্লব ভট্টাচার্য বলেন, ২০১৩ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার আসাম থেকে অবৈধ অভিবাসীদের বাংলাদেশে পুশব্যাক বা ফেরত না পাঠাতে নির্দেশনা দিয়েছে। তিনি বলেন, বন্দিশিবিরে আটক থাকা ব্যক্তিদের ঠিকানা হলো বাংলাদেশ। তাদের ঠিকানা বাংলাদেশ যাচাই করার পর এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, তারা বাংলাদেশী নাগরিক। তবে এখন পর্যন্ত আসামে কি পরিমাণ বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসী বসবাস করছেন সে সম্পর্কে কোনো সরকারি তথ্য নেই। তবে রাজ্য সরকার একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, দেশভাগের পর ও উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর আসামে ব্যাপকহারে শরণার্থী দেখা যায়। এ ছাড়া পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকেও সেখানে যান অনেক অভিবাসী। আসাম রাজ্য সরকারের মতে, প্রাথমিকভাবে এমন অভিবাসীর সংখ্যা ছিল দেড় লাখ থেকে দুই লাখ। পরে বলা হয়, তাদের সংখ্যা পাঁচ লাখ। এতে আরো বলা হয়, বিদেশী অবৈধ অভিবাসী ঘোষিত হওয়ার পর ১৯৮৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ২৫২৮ জনকে পুশব্যাক করা হয়েছে। প্রর্ত্যাবর্তন বিষয়ক চুক্তি না থাকায় ভারত এসব মানুষকে আনুষ্ঠাকিভাবে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে না।