চরফ্যাসনের নজরুল নগরের মাঝের চর থেকে গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ী নিজাম রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বলে জানা গেছে।
আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে ১০জন মাদক সম্রাট ও সরবরাহকারীদের নাম প্রকাশ করেছে। এছাড়া মাদকের ডিলার ও প্রশাসনকে মসোয়ারা দেওয়ার বিষয়ও জানিয়েছে। যা আদালতে রেকড করা হয়েছে বলে আ্নজীবী ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে। এদিকে নিজামের দেওয়া তথ্যানুযায়ী মাদক ব্যবসায়িরা চিহ্নিত হলেও তাদের গ্রেফতার গড়িমসি করছে পুলিশ।
গত ৩০ মে দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের বাবুরহাট বাজার সংলগ্ন মাঝের চরের নাসির উদ্দিনের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ নিজাম (৩৮) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে। এসময় তার কাছে ১০১ পিছ ইয়াবা ও ২৫ গ্রাম গাঁজা পাওয়া যায়। পুলিশ মাদকদ্রব্য আইনে নিয়মিত মামলার (মামলা নং ১৫ তারিখ ৩০/৫/১৮) আসামী হিসেবে আদালতে সোপর্দ করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি হাবিবুর রহমান আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আদেবন করেন। শুনানী শেষে আদালত ২ দিনর রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশ আসামিকে থানা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদকালে বেড়িয়ে আসে নতুন নতুন নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। আসামি নিজের দোষ স্বীকার করতে রাজি হলে পুলিশ আসামিকে ১ জুন চরফ্যাসন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাকিম শিবলী নোমান খানের উপস্থিতিতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পুলিশ ও আহনিজীবী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আসামি নিজাম স্বীকারোক্তিতে আদালতকে জানান, সবুজ তালুকদার পিতা কাঞ্চন মাঝি ৯নং ওয়ার্ড চরকলমী সে আমাদের ডিলার আমরা আমি তার থেকে পাইকারিভাবে দুইশ টাকা করে পারপিছ ইয়াবা ক্রয় করি এবং আমার সাথে একইভাবে আরও ২ জন তার থেকে ইয়াবা ক্রয় করে। তারা হলেন সাইকন খা পিতা এনায়েত খা জনতাবাজার খালের পূর্বপাশে ও জয়নাল পিতার নুরুল ইসলাম ৮নং ওয়ার্ড চর কলমি। আর তারা নিয়মিত তিনশ টাকা করে খুচরা বিক্রি করেন। বর্তমান ইউপি সদস্য রিয়াদ বিশ্বাস ও তার ভাই রায়হান বিশ্বাস ১নং ওয়ার্ড চরকলমি, জসিম পিতা আলী বেপারীসহ আরো অজানা অনেকে এর সাথে জড়িত বলে জানান।
পুলিশি ঝামেলাসহ সব অন্যান্য ঝামেলা মিটানোর জন্য প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে মাসোয়ারা নেয় স্বপন শিকদার, মিজান শিকদার, রেজাউল শিকদার ও হাসান শিকদার। তাদের পিতা লাল মতি সাং ১নং ওয়ার্ড চরকলমি। এছাড়া দৈনিক ২টি করে ইয়াবা ফ্রি খেতে নেয় ইউপি সদস্য রিয়াদ শিকদার।
এদিকে আসামীর থেকে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রমাণ পাওয়ার পরেও গত ৪ দিনেও এদের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এতে প্রতিরোধ অভিযানে দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশের টিলেঢালা মাদকবিরোধী অভিযান জনমনে নানা প্রশ্ন ওঠেছে।
তবে দক্ষিণ আইচা থানার অফিসার্স ইনচার্জ হাবিবুর রহমান জানান, তদন্তসাপেক্ষে গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি চলছে।