ভিডিও দেখে দেখে বাড়িতে স্ত্রীর সন্তান প্রসব করানোর চেষ্টা করেছিলেন স্বামী। আর সে সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হল স্ত্রীর। যদিও সদ্যোজাত শিশু সন্তানটি সুস্থই রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের তিরুপুরে। এই ঘটনায় স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে তামিলনাড়ু পুলিশ। গ্রেপ্তার কার্তিকেয়ন তামিলনাড়ুর তিরুপুরের রথীনগিরিশ্বরের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় একটি গার্মেন্টে কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী কৃত্তিকা স্থানীয় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। ওই দম্পতির পাঁচ বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।
জানা যায়, কৃত্তিকা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর কার্তিকেয়ন সিদ্ধান্ত নেন ভিডিও দেখে বাড়িতেই স্ত্রীর দ্বিতীয় সন্তান প্রসব করাবেন। যদিও এই বিষয়ে কার্তিকেয়ন বা তাঁর স্ত্রী কৃত্তিকার কোনো জ্ঞান ছিলো না। তথাপি কার্তিকেয়ন এই সিদ্ধান্ত নেন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর কার্তিকেয়ন একদিনের জন্যেও স্ত্রীকে নিয়ে কোনো চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাননি। এমনকি গর্ভাবস্থায় কৃত্তিকা স্থানীয় গ্রামীণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যাননি। ভিডিও দেখেই গর্ভাবস্থায় স্ত্রীর খাদ্যতালিকাও নিজে তৈরি করে দেন কার্তিকেয়ন।
গত রোববার কৃত্তিকার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তখন কার্তিকেয়ন ভিডিও দেখে দেখে স্ত্রীকে সন্তান প্রসবে সহায়তা করতে থাকেন। এই কাজে সহায়তা করেন কার্তিকেয়নের বন্ধু প্রবীণ কুমার ও তাঁর স্ত্রী লাবণ্য।
কৃত্তিকা মোটামুটি ভালভাবেই একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কিন্ত বিপত্তি ঘটে প্রসবের এক ঘণ্টা পর থেকেই। কৃত্তিকার প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়। একসময় চেতনা হারিয়ে ফেলেন কৃত্তিকা। তখন বাধ্য হয়ে কার্তিকেয়ন স্ত্রী ও সদ্যোজাত কন্যা সন্তানকে নিয়ে তিরুপুরের একটি হাসপাতালে ছুটে যান। কিন্তু ততক্ষণে কৃত্তিকা মারা গেছেন। আপাতত ওই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে সদ্যোজাত কন্যা সন্তানটি। সে সুস্থই রয়েছে।
এ ঘটনার পর কৃত্তিকার পরিবার স্থানীয় নাল্লুর থানায় কার্তিকেয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কার্তিকেয়নকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে কার্তিকেয়নের বন্ধু প্রবীণ কুমার ও তাঁর স্ত্রী লাবণ্যকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।