স্পেনের কোতিফ কাপ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে হই চই ফেলে দিয়েছে ভারত। জয়টি যেন ফুটবলে ভারতের উঠে আসার একটা বড় এক ইঙ্গিত। কিন্তু আর্জেন্টিনাকে হারানো ভারতের এই দলটিকেই যে বাংলাদেশ দুইবার হারিয়েছিল।
২০১৫ সালে সিলেটে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। কেবল ফাইনালেই নয়, গ্রুপপর্বেও ভারতের সেই দলটিকে হারিয়েছিল।
ভারতের এই জয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলছে বাংলাদেশের সেই কিশোর ফুটবলাররা। ভেতরে-ভেতরে পুড়ছে তারা। তাদের মনে প্রশ্ন—আমরা যে ভারতকে হারিয়ে দিলাম, তারাই কিনা তিন বছরের ব্যবধানে এখন হারিয়ে দিচ্ছে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে। ওরা কোথায় এগিয়ে যাচ্ছে আর আমরা কোথায় পড়ে রয়েছি!’
মঙ্গলবার দুপুরে আরামবাগ ক্লাবে নিজের কক্ষে বসে আর্জেন্টিনাকে হারানো ভারতীয় একাদশের ছবিতে আঙুল টিপে সুনির্দিষ্ট করে পাঁচজন খেলোয়াড়কে দেখিয়ে দিলেন ২০১৫ চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য আতিকুর রহমান। ভারতীয় সে খেলোয়াড়েরা হলেন গোলরক্ষক প্রভসুকান সিং গিল; ডিফেন্ডার জিতেন্দ্রে সিং ও আশিস রায়; মিডফিল্ডার সুরেশ সিং ও অমরজিত সিং। এদের মধ্যে অমরজিত তো বর্তমানে ভারতীয় যুব দলের অধিনায়কই।
তিন বছর আগে সিলেটে ভারত সেবার বাংলাদেশের সঙ্গে পারেনি। কিন্তু দেশে ফিরে তারা তাদের ফুটবলারদের পেছনে করেছে ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ। সেই বিনিয়োগের ফল মিলতে শুরু করেছে এখন। শিরোপা জয় করা বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের নিয়েও স্বপ্ন দেখা হয়েছিল। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব প্রাঙ্গণে তাদের নিয়ে কত পরিকল্পনার কথা শুনিয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন! বলেছিলেন পরবর্তী চার বছর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের খেলোয়াড়দের আনুষঙ্গিক সব খরচ বহনের কথা। বিদেশি কোচের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু একটি প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়ন করা হয়নি। পরবর্তীতে যা হয় বাংলাদেশে, হারিয়ে গেছে অসম্ভব প্রতিভাবান কিছু ফুটবলার।
বাংলাদেশের সে চ্যাম্পিয়ন দলের তিন ফুটবলার ছাড়া বাকিদের খোঁজ নেই। এই তিনজনের মধ্যে সবচেয়ে ভালো আছেন ফরোয়ার্ড সাদউদ্দিন। আবাহনী লিমিটেডের হয়ে খেলা এই ফুটবলার বর্তমানে জাতীয় দলে আছেন। বাকি দুজন হলেন আতিকুর ও স্ট্রাইকার সারোয়ার জামান নিপু ( অনূর্ধ্ব-১৬ সাফের সেরা খেলোয়াড়)। এ দুজন আছেন প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব আরামবাগে। কিন্তু গোটা দলকে একসঙ্গে রাখলে, দলটিকে নিয়ে পরিকল্পনামাফিক এগোলে যে বাংলাদেশেরই লাভ হতো, সেটি প্রমাণ করে দিয়েছে ভারতের যুব দলটিই।