সিইসির সঙ্গে একমত নন মাহবুব তালুকদার

‘বড় বড় নির্বাচনে অনিয়ম হবে না–এই নিশ্চয়তা দেওয়ার সুযোগ আমার নাই’-প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

৯ আগস্ট, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এই দ্বিমত পোষণ করেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

এই কমিশনার বলেন, ‘উনি (সিইসি) কোন পরিপ্রেক্ষিতে কেন এই কথা বলেছেন তা বোধগম্য নয়। এটা তার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। আমি কোনোভাবেই এই বক্তব্য সমর্থন করি না। এই ধরনের বক্তব্য যারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম করতে চায় তাদের উসকে দেবে। অনিয়ম করার ব্যাপারে তারা অনেক উৎসাহ পাবে বলে আমি আশঙ্কা করি।’

গত ৭ আগস্ট, মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘প্রতিবন্ধী ভোটারদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা’ বিষয়ক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘আমরা মনে করি না, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ রকম অসুবিধা হবে। তবে পাবলিক নির্বাচনে বা বড় বড় নির্বাচনে কোথাও অনিয়ম হবে না–এই নিশ্চয়তা দেওয়ার সুযোগ আমার নাই। অনিয়ম হবে হয়তো, তবে আমরা নিয়ন্ত্রণ করব। যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সাম্প্রতিক সময়ের পাঁচ সিটি নির্বাচনের যে চিত্র ছিল এবং যেসব সাংবাদিক মাঠে ছিল, তাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক কিছু না। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু করা সম্ভব? এরকম একটি প্রশ্নের জবাবে সিইসি এই মন্তব্য করেন। এরপর থেকেই সিইসির এই মন্তব্যের সমালোচনা শুরু হয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।

এদিকে সিইসি নুরুল হুদাকে সংযত হয়ে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের দেশের বাস্তবতায় সিইসি হয়ত মনে করেছেন- এটাই সত্যি। কিন্তু তার বক্তব্যে আরও সংযত হওয়া দরকার, একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে মূল দায়িত্বে তিনি আছেন। কথাবার্তা অবশ্য তিনি ভালোই বলেন, তবে স্লিপ হতেই পারে। আমি আশা করি তিনি ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্য দেবেন না।’

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনাররা। কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানে এই কমিশন প্রশংসা কুড়ালেও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পাঁচ সিটি নির্বাচনে সমালোচনার মুখে পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *