ঈদে ঘরমুখো মানুষের ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। টিকিট পেতে কমলাপুরে মানুষের দীর্ঘ লাইন এবং নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন অনেকে। গতকাল দেয়া হয় ২০শে আগস্টের টিকিট। তবে বিগত তিন দিনের তুলনায় গতকাল টিকিট প্রত্যাশী মানুষের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। তার মধ্যে আবার কমলাপুর স্টেশনে সার্ভার সমস্যার কারণে প্রায় ১ ঘণ্টা টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকে। সাময়িক টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকার কারণে গত রাত থেকে অপেক্ষমাণ টিকিট প্রত্যাশীরা চিৎকার চেঁচামেচি করে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি কার্যক্রম আবার স্বাভাবিক হয়ে আসে। শনিবার সকাল ৮টায় কমলাপুর স্টেশনে ২৬টি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। কাউন্টারের সামনে থেকে মানুষের লাইন বাইরের রাস্তায় গিয়ে ঠেকে। শুক্রবার রাত থেকে এই লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকেই এসি টিকিট পাননি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। সিল্কসিটি ট্রেনের টিকিটের জন্য গতরাত ৯টায় লাইনে দাঁড়িয়ে সারা রাত অপেক্ষার পরও এসি টিকিট পাননি আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, শত ভোগান্তি নিয়ে ১২ ঘণ্টারও বেশি লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম এসি টিকিটের জন্য। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই জানিয়ে দেয়া হলো, এসি টিকিট শেষ। ঈদের সময় এত ভিড়ের মধ্যে ছোট বাচ্চা নিয়ে এসি ছাড়া যাওয়া সম্ভব নয়। যে কারণে এত ভোগান্তি সহ্য করে সারা রাত লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। মাসুম বিল্লাহ নামে এক যাত্রী বলেন, গতরাত থেকে টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়েছি। প্রায় ১১ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানো। সকাল থেকেই ধীরগতিতে টিকিট বিক্রি করেছে। এরমধ্যে আবার ১ ঘণ্টার জন্য টিকিট বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। মানুষের একটা ধৈর্যের সীমা আছে। তার মধ্যে আবার সার্ভারে সমস্যা হয়ে টিকিট বিক্রি বন্ধ। এটা কি সহ্য করা যায়। এদিকে আজ রোববার দেয়া হবে ২১শে আগস্টের টিকিট। আর এর মধ্যদিয়ে এবারের ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ হচ্ছে। বরাবরের মতো এবারও মোট টিকিটের ৬৫ শতাংশ দেয়া হচ্ছে কাউন্টার থেকে। বাকি ৩৫ শতাংশের ২৫ শতাংশ অনলাইন ও মোবাইলে। ৫ শতাংশ ভিআইপি ছাড়াও রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫ শতাংশ। টিকিট বিক্রির সার্বিক বিষয় নিয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, সকাল ৮টা থেকে ২৬টি কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে। সকাল থেকেই প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। যাত্রী চাপ মাথায় রেখে প্রতিটি ট্রেনেই আমরা অতিরিক্ত বগি সংযুক্ত করছি। ঈদের সময় সবাই এসি টিকিট চায়, কিন্তু আমাদের এসি সিট তো সীমিত, তাই সবাইকে দেয়া সম্ভব হয় না। প্রতিটি লাইনে মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীসহ রেলওয়ের নিজস্ব বাহিনী তৎপর রয়েছে। তিনি জানান, সার্ভারে সমস্যা হওয়ার কারণে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে টিকিট বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ ছিল এবং পরে স্বাভাবিক হয়েছে।