তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের শারীরিক অবস্থা ভালো নয় বলে দাবি করেছে তার পরিবার। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানান তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ। কোরবানির ঈদের দিন কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে শহিদুল আলমের সঙ্গে দেখা করার পর এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা জানান। তার সঙ্গে ছিলেন শহিদুল আলমের সহকর্মী সাদিয়া গুলরুখ।
বিবৃতিতে বলা হয়, শহিদুল বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত। তার শ্বাস প্রশ্বাস ও চোখে সমস্যা হচ্ছে।এ ছাড়াও চোয়াল ও দাঁতের মাড়িতে যন্ত্রণা অনুভব করছেন। তাদের দাবি, গত ৫ই আগস্ট শহিদুলকে তার বাড়ি
থেকে সাদা পোশাকে একদল লোক তুলে নিয়ে যাওয়ার আগে তার এ ধরনের শারীরিক সমস্যা ছিল না। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, শহিদুলকে হাসপাতালে স্থানান্তর করে চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। আরো সুনির্দিষ্ট করে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের এই আবেদন। ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবারও কারাগারে দেখা করার পর রেহনুমা আহমেদ শহিদুল আলমের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শহিদুলের কয়েকটি সমস্যা হচ্ছে, যেগুলো আগে কখনো ছিল না। চেস্ট কনজেশন মানে খুব কাশি হচ্ছে এবং ব্যথা। আরেকটা হচ্ছে, তার দাঁতের মাড়িগুলোতে ভীষণ ব্যথা হয়েছে। এছাড়া চোখেও সমস্যা হয়েছে। আজ দেখলাম, কারাকর্তৃপক্ষ তাকে কারাগারের হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে। কিন্তু ওর সমস্যা শুনে মনে হয়েছে, ওর উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। এই চিকিৎসা বড় হাসপাতালগুলোতে সম্ভব। সেজন্য আমরা কারাগারের বাইরের হাসপাতালে তাকে নেয়ার জন্য আবেদন করেছি। এদিকে কারা কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হচ্ছে শহিদুল আলমের শারীরিক অবস্থা মোটেই খারাপ নয়। তিনি বেশ সুস্থ রয়েছেন। এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল কবীর চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, শহিদুল আলম সুস্থ আছেন। যদি তিনি অসুস্থ হন অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে কারা কতৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত ৬ই আগস্ট আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। শহিদুল আলমের মুক্তি চেয়ে এরই মধ্যে বিশ্বের বহু খ্যাতনামা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বিবৃতি দিয়েছেন।