বাংলাদেশ নতুন ইতিহাস গড়েছে এশিয়ান গেমস ফুটবলের শেষ ষোলোতে পা রেখে। ইতিহাস গড়া সেই ম্যাচে উত্তর কোরিয়ার কাছে ৩-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। ম্যাচে দুটি গোল হয়েছে প্রথমার্ধে, সুফিল-আবদুল্লাহরা দ্বিতীয়ার্ধে হজম করে আরো একটি। উত্তর কোরিয়ার কিম ইউ সং, ইং থাই ও কুক চুল একটি করে গোল করেন। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে একটি গোল শোধ করেন সাদ উদ্দিন। শক্তিশালী দলটির বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারলেও সাফের আগে বুক ভরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফিরছে বাংলাদেশগ্রুপে তাজিকিস্তানের কাছে ৩ গোলে হারের পর থাইল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। গ্রুপের শেষ ম্যাচে কাতারকে ১-০ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলোতে পা রাখে বাংলাদেশ। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৮৬ ধাপ এগিয়ে থাকা দুই দুইবার বিশ্বকাপ খেলা উত্তর কোরিয়ার জামাল-রানাদের লড়াইটা কঠিন ছিল। এর উপর গতবারের রানার্সআপ দলটির সঙ্গে খুব একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি বাংলাদেশের। ইতিহাস ঘেটে এবং সাবেক ফুটবলারদের কাছে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, এ পর্যন্ত বিভিন্ন টুর্নামেন্ট ও ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ মিলে ছয় বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও উত্তর কোরিয়া। ভরসা পাওয়ার মতো তথ্য- বাংলাদেশের জয়ের অভিজ্ঞতাও আছে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম শক্তিশালী দেশটির বিরুদ্ধে। ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রেসিডেন্টস গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ লাল দল টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে উত্তর কোরিয়াকে হারিয়ে উঠেছিল ফাইনালে। ফাইনালে বাংলাদেশ হেরে যায় দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে। বাংলাদেশকে হারাতে উত্তর কোরিয়াকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল ১৯৮৫ সালে পাকিস্তানের পেশওয়ারে কায়েদ-ই-আজম ফুটবলের ফাইনালেও। উত্তর কোরিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। এর ৩ বছর পর ১৯৮৮ সালের ১লা এপ্রিল উত্তর কোরিয়ার মাটিতে তাদের গোলশূন্য রুখে দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেটি ছিল ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ। দীর্ঘ ২০ বছর পর আবার উত্তর কোরিয়ার সামনে বাংলাদেশ। প্রত্যাশার কোনো সীমা নেই। তাই তো বাংলাদেশের ফুটবলারদের কাছে আরেকটি ঐতিহাসিক দিনের অপেক্ষায় ছিল ফুটবল প্রেমীরা। তবে, ভাবনা আর বাস্তবতা এক নয়। তা বাংলাদেশ টের পেলো ম্যাচের শুরুতেই। ম্যাচের ১৩ মিনিটে বক্সের মধ্যে ভুল করে বসেন ডিফেন্ডারা। যার খেসারত দিতে গিয়ে পেনাল্টিতে গোল হজম করে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৩৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় গতবারের রানার্সআপরা। দুই গোলে পিছিয়ে পরলেও বাংলাদেশ যে লড়াই করেনি তা বলা যাবে না। রহমত মিয়ার থ্রো তপুর হেডে সুযোগও এসেছিল। কিন্তু ভাগ্য সহায় না থাকায় সেটি আর পোস্টে থাকেনি। দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোল হজম করা বাংলাদেশ বার বার উঠে আসার চেষ্টা করেছে। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার কঠিন রক্ষণের সামনে গিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারেননি সাদ-সুফিলরা। তবে, ম্যাচের শেষ দিনে হারের ব্যবধান কমান সাদ উদ্দিন। যার ফলে ৩-১ গোলের হার নিয়ে মাঠে ছাড়ে বাংলাদেশ।
।