বাংলাদেশ ০-১ শ্রীলঙ্কা হেরে প্রস্তুতি শেষ করলো বাংলাদেশ

নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামে গতকাল অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচটি দেখতে গ্যালারিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু মাঠে উপস্থিত এসব সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারেননি মামুনুল-সোহেলরা। প্রীতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছে ১-০ গোলে। শেষ চার ম্যাচের মধ্যে এই প্রথম বাংলাদেশকে হারালো শ্রীলঙ্কা। ২০১৪ ও ২০১৬ সাল মিলিয়ে খেলা তিন ম্যাচের দুটিতে জিতেছিল বাংলাদেশ। অন্য ম্যাচটি ড্র হয়েছিল।লঙ্কানদের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ফজল।
গতকাল সকাল থেকেই শহরের প্রত্যেকটি গলিগলিতে শুরু হয় আনন্দ মিছিল। দুই দলের দলের খেলোয়াড়দের স্বাগত জানাতে শহরের মোড়ে মোড়ে ব্যানার-ফ্যাস্টুন ছিল চোখে পড়ার মতো। স্টেডিয়ামেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। খেলা শুরুর হওয়ার দুই ঘণ্টা আগেই গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। বাংলাদেশ বাংলাদেশ স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো স্টেডিয়াম। মূলত স্টেডিয়ামটি বিশ হাজার দর্শকধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হলেও মাঠে উপস্থিত ছিল এর দ্বিগুণ দর্শক। এদিন শেখ কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলে রাখে বাংলাদেশ। কিন্তু পুরো মাঠ দখলে রাখলেও আক্রমণভাগে এসে যেন খেই হরিয়ে ফেলে কোচ জেমি ডে’র শিষ্যরা। রানি-ফজলে রাব্বিরা বলারমতো কোনো সুযোগও তৈরি করতে পারছিলেন না। এশিয়াডে খেলা একাদশকে লঙ্কানদের বিপক্ষে বিশ্রাম দিয়েছিলন জেমি ডে। সুফিল-বিপলুদের অনুপস্থিতিতে এদিন প্রমাণের সুযোগ ছিল সিনিয়র ফুটবলারদের। কিন্তু ওয়ালি ফয়সাল-ফয়সাল মাহমুদরা পারছিলেন না। উল্টো পাল্টা আক্রমণ থেকে ম্যাচের ১২তম মিনিটে গোল হজম করে বাংলাদেশ। ডি-বক্সেও অনেক বাইরে থেকে গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেলের ভুলে লঙ্কানদের হয়ে গোলটি করেন ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ফজল। এর দুই মিনিট পর শ্রীলঙ্কারার ডি-বক্সে বল পেয়েও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি বাংলাদেশের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। ২১তম মিনিটে মামুনুলের পাস থেকে সহজ সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেননি সাখাওয়াত হোসেন রনি। ২৯তম মিনিটে শাখাওয়াত রনির শট অল্পের জন্য গোলপোস্টেও উপর দিয়ে চলে যায়। এর দুই মিনিট পর ফলজে রাব্বির ক্রস ফাঁকায় পেয়েও গোল করতে পারেননি রনি। বিরতি থেকে ফিরে আরো আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে বাংলাদেশ। ৪৭তম মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ পায়ও তারা। কিন্তু ডিফেন্ডার ওয়ালি ফয়সালের কর্ণার থেকে রনির নেয়া হেড অসাধারণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন শ্রীলঙ্কার গোলরক্ষক সুজন পেরেরা। এর দুই মিনিট পর বদলি নামা জুয়েল রানার শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বিপদমুক্ত করেন পেরেরা। ৬৩ মিনিটে ফের গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন রনি। ৬৫তম মিনিটে মিডফিল্ডার সোহেল রানাকে তুলে ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবনকে মাঠে নামান জেমি ডে। ৬৭তম মিনিটে দুঃসংবাদ পায় বাংলাদেশ। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশা। তার বদলি মাঠে আরেক ডিফেন্ডার মনজুরুর রহমান। চার মিনিট পর রনির দারুণ ক্রস অনেকটা লাফিয়ে তালুবন্দি করেন লঙ্কান গোলরক্ষক পেরেরা। ৭৮তম মিনিটে মিডফিল্ডার মামুনুলের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর গোলের দেখা পায়নি লাল সবুজ জার্সিধারীরা।
এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের আগে এটাই ছিল বাংলাদেশের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচ। ২০০৩ সালে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপার স্বাদ পায় বাংলাদেশ। সেবার নিজ দেশে ফাইনালে মালদ্বীপকে টাইব্রেকারে হারায় তারা। এবার ফের লাল-সবুজের দেশে বসছে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের এই মহা আসর। গত রোববার এবারের আসরে অংশ নিতে সবার আগে বাংলাদেশে আসে শ্রীলঙ্কা। আগামী ২রা সেপ্টেম্বর থেকে আসার কথা রয়েছে অন্য দলগুলোর। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বাধিক সাতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। আর একবার করে শিরোপা জেতে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। আগামী ৪ঠা সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে সাফের ১২তম আসর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *