‘এশিয়ায়’ নিজেদের ব্যাটিং সেরা মানেন সৌম্য

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিপক্ষ ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। এ তিন দলের বিপক্ষে লড়াই করে এগিয়ে যেতে হবে বাংলাদেশকে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- এ তিন বিভাগেই দিতে হবে নিজেদের সেরাটা। ওই তিন দলের সঙ্গে লড়াই করতে হলে অন্য অস্ত্র হবে ব্যাটিং। এশিয়ার সেরা তিন দলের চেয়ে ব্যাটিংয়ে কতটা এগিয়ে বাংলাদেশ! দলের তরুণ ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার অবশ্য এগিয়ে রাখলেন নিজেদেরই। গতকাল অনুশীলন শেষে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানালেন, এশিয়ায় নিজেদের ব্যাটিংই সেরা।সৌম্য বলেন, ‘আমি অবশ্যই আমাদের সবার উপরে রাখব। সম্প্রতি আমরা যেভাবে ওয়ানডে খেলেছি তাতে আমাদের ব্যাটিং অন্য দুই দল (শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান) থেকে অনেক বেশি ভালো। আমরা যদি সেখানে গিয়ে ভালো ক্রিকেট খেলি। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সবকিছুই ভালোভাবে করি তাহলে আমার মনে হয় ফলাফল আমাদের পক্ষেই আসবে।’
এশিয়া কাপে আগের দুই আসরে বাংলাদেশ খেলেছে ফাইনালে। স্বপ্নও ভেঙেছে এ ব্যাটিংয়ের কারণেই। তবে সেবার ছিল নিজেদের মাঠে। এবার দুবাইয়ে। দেশের বাইরে এশিয়া কাপের এ চ্যালেঞ্জ তাই দারুণ কঠিন। বিশেষ করে দুবাই পাকিস্তানের হোম ভেন্যু। ভারত ও শ্রীলঙ্কাও সেখানে খেলেছে। সেই তুলনাতে বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে। তাই এ তিন দলের চেয়ে ব্যাটিংয়ে এগিয়ে থাকতে হলে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে পারফরম্যান্স করতে হবে তরুণদেরও। এর মধ্যে ফর্মের বাইরে থাকা সৌম্য সরকার যদি দলে থাকেন তাকেও নিতে হবে দারুণ চ্যালেঞ্জ। দলের তরুণদের প্রতিনিধি সৌম্য বিশ্বাস করেন তারাও মুখিয়ে আছেন চ্যালেঞ্জ নিতে। তিনি বলেন, ‘তরুণদের তো সবসময়ই চ্যালেঞ্জ থাকে। কেননা সিনিয়ররা সবসময় পারফর্ম করে, আমরাও যদি করি তাহলে ফলাফল আনতে সুবিধা হবে। ওদের পাঁচজনের সঙ্গে আমরা যদি দিনকে দিন একটু একটু করেও পারফর্ম করি তাহলেও ফলাফল ভালো হবে।’ তবে তরুণদের বিপক্ষে অভিযোগ তারা দারুণভাবে ব্যর্থ। পারফরমেন্সেও তা ব্যর্থতা স্পষ্ট। তবে তরুণরা একেবারেই পারফরমেন্স করেন তা মানতে নারাজ সৌম্য। তিনি বলেন, ‘অবশ্য তরুণ একেবারেই যে করে না- তা কিন্তু না। কিন্তু ওদের (সিনিয়র) তুলনায় আমরা অনেক কম করেছি। আমাদের পারফরমেন্স ১৯-২০ থাকলে হয়তো কথাটা আসতো না যে জুনিয়ররা খারাপ করছে। আমরা হয়তো এই মুহূর্তে ১৮-২০-এ আছি। তাই আমরা যদি ভালো পারফরমেন্স করি তাহলে তাদেরও ভালো হবে, আমাদেরও।’
গেল এক বছর ধরে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি তিন ফরমেটেই দারুণভাবে ব্যর্থ সৌম্য। বিশেষ করে ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের পার্টনার হিসেবে এখনো তার জায়গা একেবারেই নড়বড়ে। এশিয়া কাপে দলে থাকাই এখন তার জন্য চ্যালেঞ্জ। তবে নিজেকে ফিরে পেতে কঠর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এ তরুণ। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে তো অবশ্যই কাজ করেছি। কোচের সঙ্গে তো অনুশীলন হচ্ছেই, এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে স্কিলের অনুশীলন করছি। আমার যেখানে ঘাটতি আছে মনে হয়, যেখানে আমি আউট হচ্ছি; সেটা নিয়ে যতটুক সময় পাচ্ছি অনুশীলন করে যাচ্ছি।’ এছাড়া জানান, নয়া কোচ রোডসের সঙ্গে কাটছে ভালো সময়। কোচের কাজের ধরন তিনি বলেন, ‘একেক মানুষের বলার ধরন একেক রকম থাকে। আমার মনে হয় একেক জনের বলার ধরন বা একেকজনের নেয়ার ধরন একেক রকম হয়ে থাকে। রোডস অবশ্যই আলাদা, আমরা যেভাবে করতাম তা থেকে। একটা সেকেন্ডও যদি কমানো যায় মানে আমরা যদি ওইভাবে দৌড়াতে পারি, তাহলে কিন্তু রান আউট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তো এসব নিয়েই আমরা অনুশীলন করছি। ভালো হচ্ছে।’
‘মোসাদ্দেকের ঘটনায় প্রভাব পড়বে না’

দলের তরুণ ক্রিকেটারদের শুধু পারফরমেন্সই নয় ব্যক্তিগত ঘটনা নিয়েও বেশ বিব্রত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান রুম্মানের ব্যক্তিগত বিতর্কিত ঘটনার রেশ না কাটতেই দুঃসংবাদ নয়া নাম এখন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। দলের ২২ বছর বয়সী এ তরুণ ক্রিকেটারের বিপক্ষে তার স্ত্রী করেছে যৌতুকের মামলা। তাই এশিয়া কাপের অনুশীলনে মামলা মাথায় নিয়ে তাকে মাঠে নামতে হয়েছে। সৈকতের এমন ঘটনার পর বেশ লজ্জিত দলের সিনিয়র সহ জুনিয়র ক্রিকেটাররাও। তাই প্রশ্ন ছিল এ ঘটনার প্রভাব দলের ওপর কতটা পড়বে। কিন্তু সৌম্য কোনোভাবে মানতে নারাজ এ ঘটনার প্রভাব পড়বে তাদের ওপর। তিনি বলেন, ‘এটা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। এখন যেহেতু ক্যাম্প শুরু হয়ে গিয়েছে আমরা চেষ্টা করি যার যার নেতিবাচক বিষয় সামনে না এনে ইতিবাচক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে। যেহেতু এশিয়া কাপ সামনেই, ১৫-১৬ দিন পরে। তো সবার চোখ সেখানেই, বড় আসরে কীভাবে ভালো করতে হবে। সেভাবেই অনুশীলন করছে সবাই। ভাই, ১৫ দিন পরেই খেলা। সবার চিন্তা এশিয়া কাপ নিয়েই। কীভাবে ভালো খেলা যায়- সেটা নিয়ে। এসব নিয়ে চিন্তা করার তো কোনো সময় নেই কারো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *