ভারতে সরাসরি সম্প্রচার চলাকালে একটি টেলিভিশনের সাংবাদিকদের ওপর উগ্র ডানপন্থি শিবসেনার আক্রমণের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মহারাষ্ট্র পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চানেল টিভি ৯ মারাঠিতে সরাসরি সম্প্রচার চলছিল। ওই সময় শিবসেনার একটি গ্রুপ সেখানে হামলা চালায় কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর। এর মধ্যে ছিলেন প্রযোজক রাহুল জোহরিও। সিপিজে’কে তিনি বলেছেন, তিনি মনে করেন শিবসেনার সঙ্গে যুক্ত একদন নেতাকর্মী তাকে ও কয়েকজন সাংবাদিককে প্রহার করেছে। তখন তারা সরাসরি সম্প্রচারে ছিলেন মহারাষ্ট্রের আমরাবতীর একটি জিমনেসিয়াম থেকে। ওই সময়ের একটি ফুটেজে দেখা যায় প্রশান্ত ওয়াংখেড়ের নেতৃত্বে একদল লোক হামলা চালাচ্ছে।এর মধ্যে প্রশান্ত ওয়াংখেড়ে হলেন শিবসেনার নির্বাচিত একজন প্রতিনিধি। জোহরি বলেন, শিবসেনার নেতাকর্মীরা প্রথমে বিশৃংখলা করার চেষ্টা করে। ওই সময় চ্যানেলটি একটি জনমত জরিপের ফল প্রকাশ করছিল। তাতে দেখা গেছে, আমরাবতীর শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ মনে করেন, তারা পার্লামেন্ট নির্বাচনে শিবসেনার আনন্দ রাও আদসুলকে ভোট দিতে চান।
ওয়াশিংটনে সিপিজের এশিয়া প্রোগ্রাম বিষয়ক সমন্বয়ক স্টিভেন বাটলার বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এমন মুক্ত, প্ররোচণাহীন হামলায় দ্রুততার সঙ্গে ও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত মহারাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের। সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের এমন নৃশংস উদ্যোগকে সহ্য করা হবে না এমনটা প্রমাণ করতে রাজ্য কর্তৃপক্ষেরও পদক্ষেপ নেয়া উচিত। ওইসব সাংবাদিক জনগণকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছিলেন।
জোহরি সিপিজে’কে বলেছেন, তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে প্রায় ১০ জনের একটি দল। আহত হয়েছেন শো’য়ের উপস্থাপক গজানন উমাথে, স্থানীয় সাংবাদিক সুরেনদ্র আখোড়ে, ক্যামেরা অপারেটররা ও প্রযোজকরা। তিনি আরো বলেন, হামলাকারীরা যখন জানতে পারে তিনিই এ শোয়ের প্রধান প্রযোজক তখন তারা তাকে ঘিরে ফেলে। তারা তাকে হত্যার হুমকি দেয়। প্রহার করতে শুরু করে। একজন তার গলা চেপে ধরে।
সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, এ ঘটনার পর যখন পুলিশ উপস্থিত হয় ততক্ষণ হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। জোহরি বলেছেন, তিনি গুরুত্বর আহত হন নি। তবে তাকে সরকারি একজন চিকিৎসক পরীক্ষা করেছেন। পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। অন্য সাংবাদিকরাও গুরুত্বর আহত হন নি। অভিযোগে জোহরি বলেছেন, ওয়াংখেড়ের নেতৃত্বে একজন শিবসেনা নেতাকর্মী হামলা করে এবং তাকে হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় পুলিশ ওয়াংখেড়ে ও অন্য দু’জনকে গ্রেপ্তার করে ২৫ শে আগস্ট। পরে তাদের জামিনে ছেড়ে দেয়। এ বিষয়ে সিপিজে ওয়াংখেড়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সিপিজে। কিন্তু কোনো সাড়া দেন নি তিনি। ওদিকে তাদেরকে গ্রেপ্তারের পর এমপি আদসুল ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এতে তিনি বলেন, ওই ঘটনায় তার দলের মাত্র একজন সদস্য জড়িত ছিল। ওই ব্যক্তিকে তিনি বহিষ্কারের সুপারিশ করবেন বলেন জানান। এ ঘটনার পর জোহরি বলেছেন, তিনি মনে করেন পুলিশ যাতে যথাযথ অনুসন্ধান করতে না পারে সে জন্য তাদের ওপর চাপ দিচ্ছেন আদসুল। এমপি আদসুল এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।