রাজধানীর নয়াপল্টনে চলছে বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ। আজ শনিবার দুপুর ২টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক এ সভা শুরু হয়। কিন্তু সভা শুরুর আগেই দলের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেয়।
সভা শুরু পর থেকেই বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। তাঁরা তাঁদের বক্তব্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন। তাঁরা বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। মুক্ত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচনে যাবে বিএনপি।
এদিকে জনসভা শুরুর পর যখন নেতারা বক্তব্য দেন ঠিক এ সময় বিএনপির দুটি পক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় তারা একে অপরের দিকে পানির বোতল, ব্যানার, ফেস্টুন ছুড়ে মারে।
সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘এখন আমাদের আন্দোলন হচ্ছে সিইসি নুরুল হুদার বিরুদ্ধে। কারণ শেখ হাসিনা সরকার যা বলছে, যা করতে চাইছে হুদা কমিশন সেগুলো বাস্তবায়ন করছে। ১৯৯৬ সালের জনতার মঞ্চের নেতা নুরুল হুদার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। আর নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তাঁর নেতৃত্বেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে, দেশের গণতন্ত্র মুক্ত হবে।’
যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশে কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।’
‘আমরা সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। না হলে দেশের জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের প্রিয় নেত্রীকে মুক্ত করে আনবে’, যোগ করেন খোকন।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘আজ মিথ্যা মামলায় কারাগারে আমাদের নেত্রী। আমরা সরকারকে বলতে চাই, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। না হলে এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার বলেন, ‘আজ খালেদা জিয়া কারাগারে নয়, বাংলাদেশের গণতন্ত্র কারাগারে। তাঁকে কারাগারে আটকে রেখে বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে সরকার। কিন্তু আমরা সরকারকে বলতে চাই, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তাঁর নেতৃত্বে নির্বাচনে যাব।’
ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাদরু বলেন, ‘আজ আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আমাদের জন্য আনন্দ নয়, বিষাদের। কারণ, আমাদের প্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে। আজ আমরা শপথ নিয়েছি, খালেদা জিয়াকে এই অবৈধ সরকারের কারাগার থেকে মুক্ত করার।’
যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব বলেন, ‘খালেদা জিয়া এ দেশের মাটি ও মানুষের নেত্রী। অবৈধ সরকার অন্যয়ভাবে তাঁকে জেলে আটকে রেখেছে। আমরা তাঁকে কারাগারে রেখে আজ আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছি।’
নীরব সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী খালেদা জিয়াকে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনবে। তাঁর নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটাব।’
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রেখেছে এ অবৈধ সরকার। তারা চায়, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আবারও একটা পাতানো নির্বাচন করতে। কিন্তু এ দেশের জনগণ খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো নির্বাচন হতে দিবে না।’ তিনি বলেন, ‘সরকার যদি খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চায় তাহলে দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সেটি প্রতিহত করা হবে। আগামী নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে মুক্ত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। এ ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’
মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিবে। আর সেই নির্বাচন হবে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। তাঁকে কারাগরে রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন দেশে হতে দেওয়া হবে না।’