তরুণদের নিয়ে সমাজকে বদলে দিতে কাজ করছে জেসিআই বাংলাদেশ

বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। এ দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সম্পদ তার উদীয়মান যুবসমাজ। এই যুবসমাজকে কাজে লাগিয়ে সমাজকে বদলে দিতে চায় তরুণদের সংগঠন জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল- জেসিআই বাংলাদেশ। এ লক্ষ সামনে নিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাটি। দেশ-বিদেশের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংগঠনটি বর্তমানে বিভিন্ন ইতিবাচক কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মহাখালীতে বি দ্য চেঞ্জ নামে একটি বড় ধরনের কর্মশালার আয়োজন করছে জেসিআই বাংলাদেশ।তরুণদের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি আদর্শ সমাজ বা কমিউনিটি গঠনের প্রয়াস নিয়ে এগিয়ে চলা জেসিআই বাংলাদেশের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে সম্প্রতি সংস্থাটির ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ফায়াজ আতিকুল ইসলাম, ন্যাশনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট এরফান হক ও ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ইরফান ইসলামের সঙ্গে কথা হয় আরটিভি অনলাইনের। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন  সিনিয়র নিউজরুম এডিটর শাহীনুর রহমানআরটিভি অনলাইন: প্রথমে জেসিআই ও জেসিআই বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চাইবো।জেসিআই বাংলাদেশ: জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল- জেসিআই একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ১২০টি দেশে জেসিআইয়ের কার্যক্রম চলমান আছে। এটি মূলত মেম্বারশিপ ভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা। বিশ্বে সংস্থাটিতে প্রায় ২ লাখের বেশি তরুণ সম্পৃক্ত আছে। যাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছর।১৯১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিশোরিতে গঠিত হয় জেসিআই। সক্রিয় তরুণ নাগরিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক এবং তাদের উন্নয়নের জন্য জেসিআই কাজ করে। জেসিআই মূলত তরুণ ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও প্রফেশনালদের একটি চেম্বার অর্গানাইজেশন। বর্তমানে সংগঠনটির ৫ হাজার কমিউনিটি রয়েছে। বাংলাদেশে এটি জেসিআই বাংলাদেশ নামে পরিচিত। বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে এই সংস্থার সদস্য পদ লাভ করে। তরুণদের দিয়ে কীভাবে সমাজকে বদলে দিচ্ছে জেসিআই?জেসিআই বাংলাদেশ: এখানে দেশ-বিদেশের তরুণদের নিয়ে একটা শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করা হয়। ইতিবাচক সমাজ পরিবর্তনে কাজ করে থাকে সংগঠনটি।জেসিআই মূলত তার সদস্য বা বাইরের তরুণদের নিয়ে কাজ করে। তবে প্রথমে গুরুত্ব দিয়ে থাকে নিজ সদস্যদের। সংগঠনটির কিছু প্রোগ্রাম রয়েছে। যেমন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনিং, যার মাধ্যমে কোর্সের আয়োজন করে মেম্বারদের দক্ষতা বাড়ানো হয়। জেসিআই বাংলাদেশ একটি লিডারশিপ প্ল্যাটফর্ম। প্রফেশনাল, ইন্টারপ্রেইনারসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর জেসিআই প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা করে থাকে। তবে সেটা অবশ্যই হতে হবে ইয়োথ ব্যাকগ্রাউন্ডেড।

সংস্থাটি প্রতিবছর সমগ্র বিশ্ব থেকে ১০ জন তরুণকে আন্তর্জাতিক সম্মাননা প্রদান করে। জেসিআই ইউএস কর্তৃক ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আওতায় প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০০ প্রোজেক্ট পরিচালনা করে। বাংলাদেশের তরুণদের সামাজিক উন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়ন জেসিআই কাজ করে থাকে। বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ তরুণ। তাই আমাদের দায়িত্ব এই তরুণদের সক্রিয় নাগরিক হিসেবে রূপান্তরিত করণসহ তাদেরকে আগামী দিনের নেতৃত্বে দাঁড় করানো। এই সংগঠনের মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র-হতদরিদ্র মানুষের দোরগোড়ায় নাগরিক সেবা পৌঁছে দেয়া, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি ও তাদের সুযোগ সুবিধা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি/বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করা আমাদের কর্মকাণ্ডের একটি অংশ।যেমন ধরা যায়, কেউ স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে চায়। কিন্তু দেখা যায় তার একার পক্ষে সেটা করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে জেসিআই সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কলাবোরেট করার প্ল্যাটফরমটা তৈরি করে দেয়; নেটওয়ার্ক গড়ে দেয়।জেসিআইএর ট্রেইনিংগুলো সাধারণত সেলফ ডেভেলপমেন্টের ওপর হয়ে থাকে। তাছাড়া সংগঠনটির কিছু কমিউনিটি ভিত্তিক প্রোগ্রাম রয়েছে- যেমন হেলথকেয়ার, লিডারশিপ, কমিউনিকেশন, শিক্ষা, হাইজিন, রোড ট্রাফিক এওয়ারনেস।জেসিআই সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করে এমন বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট করে থাকে। যেমন কোনও ইস্যু নিয়ে যুবসমাজকে বার্তা দেয়া। তাদের মোটিভেট করা, সমাজমুখী করা।উদাহরণস্বরূপ এ বছরের শুরুতে সংগঠনটি এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে সফল ইয়ং উদ্যোক্তাদের একত্রিত করে। ওই অনুষ্ঠানে সফলদের চলার পথে নানা সমস্যা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়। যার মাধ্যমে সফলদের এগিয়ে চলার নানান গল্প উঠে আসে। এছাড়া প্রতিবছর তরুণদের বাজেট ভাবনা নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনার আয়োজন করে সংস্থাটি।  আগামী ৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বি দ্য চেঞ্জ নিয়ে কিছু বলুন।জেসিআই বাংলাদেশ: ২০১৮ সালের সবচেয়ে বড় কর্মশালার আয়োজন করছে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। যাতে ১২ জন সফল মানুষের তাদের স্বপ্ন পূরণের গল্প শুনাবেন। পাশাপাশি তারা সমাজে কী অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন তাও উঠে আসবে।আগামী ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া কনভেনশনের হেলমেট হল রুমে এই কর্মশালা হবে। ওই অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো জেসিআই সিভি সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছে। এর মাধ্যমে সংস্থাটি চাকরিপ্রত্যাশী তরুণদের কাছ থেকে সিভি নিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।সবশেষ জানতে চাইবো কীভাবে জেসিআই বাংলাদেশের সদস্য হওয়া যায়?জেসিআই বাংলাদেশ: এর সদস্য হওয়া একেবারেই সহজ। এজন্য যারা সদস্য আছে তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হয়। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে মেম্বারশিপ পাওয়া যায়। তবে এজন্য বয়স বিবেচ্য বিষয়। জেসিআইএর সদস্য হতে গেলে তার বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছর হতে হবে। বাংলাদেশে জেসিআইএর ১৪টি চেপ্টার আছে। তাদের মাধ্যমে সদস্য হওয়া যায়। ওই চ্যাপ্টারগুলো স্থানীয়ভাবে কাজ করে। তারাই মূলত বিভিন্ন বিষয়ে ট্রেইনিংগুলো দিয়ে থাকে, কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক করে। বার্ষিক ফি দিয়ে ওই চ্যাপ্টারের সদস্য হতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *