কারাগারে আইনজীবীদের সাক্ষাৎ খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশেষায়িত হাসপাতালে নেয়ার দাবি

কারাগারে সাক্ষাতের পর আইনজীবীরা জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশেষায়িত হাসপাতালে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। গতকাল বিকালে নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিনিয়র ৪ আইনজীবী। এর আগে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার দাবি জানান। এ বিষয়ে কথা বলতে আগামীকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করবেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। সাক্ষাতের জন্য বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। গতকাল বিকালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম। সাক্ষাতের মূল উদ্দেশ্য ছিল ম্যাডামকে দেখা।কারাগারে সাক্ষাতের পর আইনজীবীরা জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশেষায়িত হাসপাতালে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। গতকাল বিকালে নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিনিয়র ৪ আইনজীবী। এর আগে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার দাবি জানান। এ বিষয়ে কথা বলতে আগামীকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করবেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। সাক্ষাতের জন্য বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। গতকাল বিকালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম। সাক্ষাতের মূল উদ্দেশ্য ছিল ম্যাডামকে দেখা।কারণ আমরা জানতে পেরেছি ম্যাডাম গুরুতর অসুস্থ এবং আদালতেও বলেছেন তিনি অসুস্থ।

জয়নুল আবেদিন বলেন, এসে আজ যা দেখলাম তা খুবই অমানবিক। ম্যাডাম কিভাবে আগের দিন আদালতে এসেছেন, সেটা বুঝতে পারছি না। কিভাবে তাকে আনা হয়েছে সেটাও আমরা বুঝতে পারছি না। এরকম একজন অসুস্থ লোককে আদালতে টানাহেঁচড়া করে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো খুবই অমানবিক। আমরা আইনজীবীরা আগেও উনাকে দেখেছি। এর আগে আমরা কয়েকবার তাকে দেখতে কারাগারে এসেছি। আর আজকে যা দেখলাম, সেটা খুবই খারাপ অবস্থা। তার বাম দিকটা মোটামুটিভাবে উঠাতে পারছেন না, নাড়াতে পারেন না। বাম পাশ পুরো অবশ হয়ে গেছে। চোখেও খুব ব্যথা হচ্ছে। চোখের অবস্থা আগামীতে কি হবে তাও বলা যায় না। কারাগারের ভেতরে ম্যাডামকে যে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, এই চিকিৎসা আমার মনে হয় তাকে আরো অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী কারাগারে ম্যাডামকে দেখতে এসেছিলেন। তিনি আমাকে বললেন- গত সপ্তাহে একটু ভালো দেখেছিলাম। আজকে যা দেখলাম সেটা আরো করুণ অবস্থা।

খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আজকে দেখে গেলাম। আপনারা জানেন- জেলখানার মধ্যে একটা আদালত বসিয়ে জোর করে ম্যাডামকে এখানে নিয়ে এসে বিচারকার্য পরিচালনা করা হচ্ছে। সরকারের উদ্দেশ্য আপনারা ভালোভাবেই বুঝতে পারেন। সে জন্যই বলছি। আগামীতে সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে- আগে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা করান। তাকে বাঁচতে হবে। বাংলাদেশের জন্য তাকে বাঁচতে হবে। তার বাঁচার অধিকার আছে। দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তাকে বাঁচতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালে নেয়া হোক। ইউনাইটেড, অ্যাপোলো বা যেকোনো বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করুন। তার পর তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান। চিকিৎসার আগে তার পক্ষে কোনো অবস্থাতেই আদালতে উপস্থিত হওয়া সম্ভব নয়। এটা তিনি আমাদের কাছেও জানিয়েছেন। সেদিন আদালতকেও জানিয়েছেন।

আমরা আশ্চর্য হয়ে যাই, এরকম একজন অসুস্থ মানুষকে কিভাবে আদালতে হাজির করা হয়েছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে থাকা ৩৬টি রাজনৈতিক মামলা সব সময় তিনি আইনগতভাবেই মোকাবিলা করেছেন। বাকি দিনেও তিনি আইনগতভাবেই মোকাবিলা করতে চান। তার আগে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দরকার। সেই চিকিৎসা যেন অনতিবিলম্বে দেয়া হয়। অনতিবিলম্বে মানে হচ্ছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। আমাদের দাবি হচ্ছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হোক। আর এখানে শুধু খালেদা জিয়ার কন্ডাক্টিং ল’ ইয়ার না। আমি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে বলছি- আমরা এরকম অবস্থা জীবনে কখনো দেখিনি। কাজেই আমরা মনে করি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দরকার। আগে চিকিৎসা তার পরে বিচার।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এতই অসুস্থ যে, আমরা মনে করেছি এই মুহূর্তে তার সঙ্গে আগামী নির্বাচন বা দলীয় বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করা সমীচীন হবে না। তার কারণ তিনি এখন জেলখানার মধ্যে। তিনি বাইরের আলো বাতাস দেখছেন না। তাকে টেলিভিশন ঠিকমতো দেখতে দেয়া হচ্ছে না। তাকে একটা দুইটা পত্রিকা দেয়া হয় তাদের ইচ্ছা মতো। যে পত্রিকার মধ্যে বাইরের কথা ছাপা হয় সেটা দেয় কি না সেটাও আমাদের সন্দেহ। আমরা এই কারণে তাকে বিব্রত করিনি। তার কারণ আপনারা যদি দেখতে পেতেন যে, ম্যাডাম কত অসুস্থ। তাহলে বুঝতেন সেখানে আলাপ করা যাবে কিনা। এই কারণে আমরা নির্বাচন আর দল নিয়ে আলাপ আলোচনা করতে বিব্রতবোধ করেছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার জোর করে নির্বাচন করবে বা নির্বাচন হবে সে ব্যাপারে আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন।

এর আগে শুক্রবার বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে আইনজীবীরা কারাগারে পৌঁছে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে সাক্ষাতের অনুমতি চান। বিকাল ৫টার কিছুক্ষণ আগে কারাগারে সাক্ষাতের জন্য প্রবেশ করেন। প্রায় ১ ঘণ্টা সাক্ষাৎ শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বের হন। সাক্ষাতে যাওয়া আইনজীবীরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী, আব্দুর রেজ্জাক খান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন।

অন্যদিকে খা?লেদা জিয়া সু?চি?কিৎসা নি?শ্চিত করার দা?বি নি?য়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের স?ঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য চিঠি দিয়েছে বিএনপি। চিঠির প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সময়ও পে?য়ে?ছে বিএন?পির এক?টি প্র?তি?নি?ধি দল। আগামীকাল রোববার বি?কাল ৩টার দি?কে তা?দের এ সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল ক?বির খান জানান, বিএন?পি মহাস?চিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দ?লের স্থায়ী ক?মি?টির সদস্যরা প্র?তি?নি?ধি দ?লে থাক?বেন। এর আগে গতকাল শুক্রবার সকা?লে দ?লের কেন্দ্রীয় কার্যাল?য়ে আ?য়ো?জিত এক সংবাদ স?ম্মেল?নে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি জানানোর জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *