হিসাব না কষে জয়ই লক্ষ্য বাংলাদেশের

পরপর দু’টি জয়। বাংলাদেশের ফুটবলে সামপ্রতিক অস্থির সময়ে একটু শান্তির বাতাস। তবে স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকদের শান্তির জয় উপহার দেয়া ফুটবলারদের স্বস্তি নেই। তাদের স্বস্তিতে না থাকার কারণ সেমিফাইনাল নিশ্চিত না হওয়া। ভুটান, পাকিস্তানকে হারানোর পরও সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়নি বাংলাদেশের। নয় বছর পর সাফের সেমিফাইনাল খেলতে হলে আজ সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হার এড়াতে হবে স্বাগতিকদের। আর হার এড়ানোর ম্যাচে তপু-জামালদের প্রতিপক্ষ ভয়ঙ্কর নেপাল। যার পাকিস্তানের সঙ্গে হারের ঝাল মিটিয়েছে ভুটানের সঙ্গে, চার গোলের জয় দিয়ে।এদিকে নানা সমীকরণ মাথায় নিয়ে ভুটানের বিপক্ষে মাঠে নামবে পাকিস্তান।
চারদলের গ্রুপে বাংলাদেশ জিতেছে দুই ম্যাচ। একটি করে জয় নিয়ে সেমিফাইনালের আশা জিইয়ে রেখেছে নেপাল ও পাকিস্তান। শেষ ম্যাচে পাকিস্তান, ভুটানকে বড় ব্যবধানে হারাতে পারলে সেমিফাইনালের টিকিট পাবে। আর স্বাগতিক বাংলাদেশ হার এড়ালে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে সেমিফাইনালে। জিতলেতো কথাই নেই। তবে হারলে বিপদ। তখন দেখতে হবে হেড টু হেড। হেড টু হেডে বাংলাদেশ নেপালের কাছে হারলে তিন দল অবস্থান সমান হয়ে যাবে। তখন গোল গড়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। যেখানে ভুটানের জালে চার গোল দিয়ে এগিয়ে নেপাল। পাকিস্তানও চাইবে ভুটানের বিপক্ষে ব্যবধানটা বাড়িয়ে নিতে। এই ম্যাচটি শুরু হবে বিকাল চারটায়। এ ম্যাচের ফলাফল দেখেই মাঠে নামতে পারবে স্বাগতিকরা। তবে নেপাল ম্যাচের আগে এতো সব মাথায় নিতে চান না বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে। তিনি ভালো করেই জানেন ড্রয়ের আশায় খেলতে গেলে বিপদ হতে পারে। এ কারণেই শিষ্যদের স্বাভাবিক খেলাটাই দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। তার বিশ্বাস আগের দুই ম্যাচে যেমন খেলেছে বাংলাদেশ, নেপাল ম্যাচে তার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারলেই জয় আসবে।
চারদিনে দুই ম্যাচ খেলায় সেরা একাদশকে বিশ্রাম দিয়ে বাকিদের নিয়ে বিকালে কমলাপুর স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন কোচ জেমি ডে। একাদশের বাইরে থাকা রনি, সোহেল রানাদের নিয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক ঘাম ঝরালেন কোচ। এর ফাঁকেই কোচ বলেন, পাকিস্তান আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে দেয়নি। তবে নেপাল ভিন্ন কৌশলে খেলে। আমরাও এই ম্যাচে ভিন্ন কৌশলে খেলবো। এশিয়ান গেমস থেকেই বাংলাদেশের খেলার ধরনে পবির্তন এসেছে। এখন পুরো নব্বই মিনিটই লড়াই করতে পারে বাংলাদেশ। শেষদিকে এখন গোল হজমের বিপদ থেকেও অনেকটা বেরিয়ে এসেছে। তবে নেপাল ম্যাচের আগে কোচ জানান, আমরা দু’টি ম্যাচ জিতেছি। কিন্তু আজকের ম্যাচই আমাদের আসল ম্যাচ। নেপালের ভুটানের বিপক্ষে খেলা ম্যাচটি আমি দেখেছি। সেখানে দুর্দান্ত খেলেছে তারা। ওই ম্যাচের ভিডিও দেখেই আমি আমার পরিকল্পনা সাজাব। আমার মনে হয় না আমাদের ডিফেন্ডাররা ওদের ফরোয়ার্ডদের ভয়ঙ্কর হয়ে উঠার সুযোগ দেবে।
ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে নেপালের কাছে ৩৩ ধাপ পেছনে থাকলেও মুখোমুখি লড়াইয়ে বেশ এগিয়ে বাংলাদেশ। এ যাবৎ ২১ বারের সাক্ষাতে ১২ ম্যাচ জিতেছে লাল সুবজের প্রতিনিধিরা। ছয় হারের বিপরীতে ড্র হয়েছে তিন ম্যাচ। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু কাপে দুই দলের সর্বশেষ সাক্ষাতে ম্যাচটি শেষ হয়েছিল অমীমাংসিতভাবে। তবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এসব পরিসংখ্যানের ধার ধারেন না নেপালের কোচ বালগোপাল মহারজন। তার বিশ্বাস ভুটান ম্যাচে তার শিষ্যরা যে ম্যাচ খেলেছে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে স্বাগতিক বাংলাদেশ কেন টুর্নামেন্টের কোনো দলই কুলাবে না। সত্যিই পাকিস্তানের সঙ্গে ভালো খেলে হারার পর ভুটান ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছে নেপাল। বিশেষ করে বিমল গাত্রিমাগার, ভারত খাওয়াজ ও অনন্ত তামাংরা বিপদেও কারণ হয়ে যেতে পারেন যে কোনো সময়। তবে এসব নিয়ে না ভেবে নিজেদের খেলাটার দিকেই নজর দিতে চান আগের দুই ম্যাচে জয়ের নায়ক তপু বর্মণ। তিনি ফুটবলপ্রেমীদের স্টেডিয়ামে আশার আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, আপনারা স্টেডিয়ামে আসুন, আমরা আমাদের জয় উপহার দেবো। যে জয় বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে সাফ সুজুকি কাপের কাঙ্ক্ষিত সেমিফাইনালে।

মুখোমুখি পরিসংখ্যান
দল ম্যাচ জয় ড্র হার গোল
বাংলাদেশ ২১ ১২ ৩ ৬ ২৬/১৪
নেপাল ২১ ৬ ৩ ১২ ১৪/২৬

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *