বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ পরাজিত হচ্ছে, সরকার পরাজিত হচ্ছে, আর সেই জন্য পালাবার পথ খুঁজছে। কীভাবে পালাবে সেই পথ খুঁজছে।’ আজ শনিবার সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতা আরো বলেন, “খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে বলেছেন, ‘আমি হয়তো কারাগারে চলে যাব। তাই আপনাদের সব রাজনৈতিক দল, সংগঠনকে নিয়ে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আমরা তাঁর নির্দেশে, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে চেষ্টা করছি একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে। তাই নিয়ে কাজ করছি। সব প্রক্রিয়াধীন আছে। আমরা আশা করছি খুব দ্রুত সেটি সফল হবে।”
এ ছাড়া নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের মাঝে একটা ভুল ধারণা কাজ করছে, সেটি হলো অনেকে বলে থাকেন খালেদা জিয়াকে ছাড়া আলোচনার কথা। এটা আপনাদের ভুল ধারণা, খালেদা জিয়ার মুক্তি বাদ দিয়ে কোনো আলোচনা নয়। সবাই তাঁর মুক্তির জন্য আন্দোলন করছেন। বি চৌধুরী নিজেই বিবৃতি দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছেন।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচারের জন্য আদালত কারাগারে স্থানান্তর করার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে, বেআইনি পন্থায় কারাগারে আদালত স্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে তারা মানবতাবিরোধী কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জিয়াউর রহমান কারাগারে আদালত স্থাপন করেছিলেন। এটা ঠিক না, ওই সময় যে বিচার কাজ হয়েছে সেটি ছিল একটি মার্শাল ল’র অধীন। আজ যা হচ্ছে সেটি মানবতাবিরোধী।’
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়ে পালাবার পথ খুঁজছে, যার জন্য আজ মরিয়া হয়ে শেষ চেষ্টা করছে কীভাবে বিএনপিকে দমন করা যায়। জনগণের ঐক্য বন্ধ করা যায়। জাতীয় ঐক্যকে বন্ধ করা যায়। দানবীয় একটি সরকার জনগণের ওপর চেপে বসেছে। তাঁরা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে দেশের জনগণের ওপর নির্যাতন করছে। নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখার শেষ চেষ্টা করছে। তাই, আজ যে সংকট তৈরি হয়েছে তা থেকে মুক্তি পেতে জনগণের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের এখন এ দানব সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আর বৃহত্তর ঐক্য কখনো হবে না যদি না আমরা সবাই কিছু না কিছু ত্যাগ স্বীকার করি। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে সবাইকে কিছু ছাড় দিয়ে হলেও একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলব। বিরোধী দল ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এ দেশের জনগণ কখনো কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়ায়নি। প্রবল শক্তিশালী পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয়ী হয়েছে। পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচারের সঙ্গে যুদ্ধ করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছে। এবারও গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবে।’