নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের পদত্যাগ দাবি করেছে ১৪ দল। ক্ষমতাসীন জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, মাহবুব তালুকদার সাংবিধানিক পদে থেকে অসাংবিধানিক কথা বলায় তার দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিত। গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবির কথা জানান। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সাংবিধানিক পদে থেকে নির্বাচন কমিশনের গোপনীয় বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলা সংবিধান পরিপন্থি। মাহবুব তালুকদার সাংবিধানিক পদে থেকে অসাংবিধানিক কথা বলায় তার দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিত। সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন প্রসঙ্গে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ব্যারিস্টার মইনুল কে? তিনি সেই লোক, যিনি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে বিশ্বাসঘাতক মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। পরে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টিও গঠন করেছিলেন। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ১/১১ পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সব মামলা দিয়েছিলেন তিনিই। এখন সেই মইনুল হোসেন বিএনপি-জামায়াতের সব হয়ে গেছেন। আজ বিএনপির প্রিয় ও বিশ্বস্ত লোক হয়েছেন। আর এখন গণতন্ত্রের কথা বলছেন। এটা গণতন্ত্র উদ্ধার করার নয়, অশুভ শক্তি। এরা পরীক্ষিত গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি। তিনি বলেন, ১/১১ এর সময় দেশবাসী ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা দেখেছে। তিনি তখনকার অনির্বাচিত সরকার সম্পর্কে বলেছিলেন এই সরকার যত দিন ইচ্ছা চালিয়ে যেতে পারবে। এই হচ্ছেন ড. কামাল হোসেন। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত নতুন সাথী নিয়ে অযৌক্তিক দাবি তুলে অশুভ চক্রান্ত শুরু করেছে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে তারা একটি ‘অভিলাষ’ নিয়ে মাঠে নেমেছে। তাদের এই অভিলাষে দেশবাসী বিভ্রান্ত হবে না। সংবিধান অনুযায়ী-ই নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হবে। আর নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি সরকার দেশ পরিচালনা করবে। এটা সংবিধান নির্ধারিত। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই তারা নির্বাচনে আসুন, তাদের নির্বাচনে স্বাগত জানাই। কিন্তু অযৌক্তিক দাবি আদায়ের নামে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করলে দেশের মানুষ তাদের প্রতিহত করবে। এ সময় টকশোতে অসত্য বক্তব্য দেয়ায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান তিনি। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তিনি সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করার অভিপ্রায়ে সেনাপ্রধান সম্পর্কে এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য যারা ষড়যন্ত্র করছেন, তাদের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন। নির্বাচনকে সামনে রেখে মহাজোট ছোট বা আরো বড় করা হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেন, এখনই বলা যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি যদি হয়, সেটি তিনি দেখবেন জোটের পরিসর বাড়ানো যায় কিনা। জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ১৪ দলের এ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- সাম্যবাদী দলের সাধারণ দীলিপ বড়ুয়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, ওয়ার্কার্স পার্টি পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান, আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, গণআজাদী লীগের এসকে সিকদার প্রমুখ।