২০১৭তে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টাইগারদের ভরাডুবির পর দল থেকে বাদ পড়েন সৌম্য সরকার। এবারের এশিয়া কাপে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ইনজুরির কারণে সুযোগ আসে সৌম্যেরও। এর পর ভিন্ন চেহারায় দেখা যাচ্ছে সৌম্যকে। আগের টানা পাঁচ ইনিংসে দুই অঙ্কের রানের কোঠায় পৌঁছতে ব্যর্থ সৌম্য খেলতে নামেন এশিয়া কাপের ফাইনালে। আর ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে ৩৩ রানের ইনিংস খেলার পর নিজেকে ফিরে পান সৌম্য। জাতীয় ক্রিকেট লীগে রাজশাহীর বিপক্ষে খুলনা বিভাগের হয়ে ম্যাচ বাঁচানো সেঞ্চুরি করেন এ বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। পরের ম্যাচে রংপুর বিভাগের বিপক্ষে দুই ইনিংসে করেন ৭৬ ও ৭২ রান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশকে নেতৃত্ব দেন সৌম্য।ওই ম্যাচেও সেঞ্চুরি করেন তিনি। আর সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে দলে ফিরেই হাঁকান অনবদ্য সেঞ্চুরি। তাহলে সৌম্যের সমস্যাটা ছিল কোথায়? সৌম্য বললেন ‘ফেসবুক’। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় শেষে সৌম্য সরকার বলেন, আমার কাছে মনে হয়, বাইরের কথা বেশি শুনতাম। ফেসবুকটা যখন ব্যবহার করতাম, তখন নেতিবাচক মন্তব্যগুলো আসত অনেক, যা মাথায় গেঁথে যেত। মানুষ ইতিবাচক জিনিসটা লেখেও না। এমন এক-একটা হেডলাইন আসত যেন আমি সবই খারাপ করেছি। আর আমরা বাংলাদেশিরা হেডলাইনটাই বেশি পড়ি, ভেতরে কী আছে পড়ে দেখি না। পরে ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ করার কথা ভেবেছি। নেতিবাচক জিনিসগুলো কম নেব, মানুষের সঙ্গে কথা কম বলব। শুধু ইতিবাচক জিনিস নিয়েই বেশি ভাবার চেষ্টা করেছি। অনুশীলনও কম করতাম তখন। যখন খারাপ যায়, তখন সবই খারাপ যায়, ভালো কিছু করলেও দেখা যায় খারাপই হচ্ছে। বন্ধুদের সঙ্গে একটু বেশি সময় কাটাতাম সেই সময়ে। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো সেটা কিন্তু ওই ম্যাসেঞ্জারে নয়। সশরীরে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে সৌম্য যখন ব্যাট হাতে ক্রিজে যান দল তখন চাপে। ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট খোয়ান ওপেনার লিটন কুমার দাস। তবে, সৌম্য খেললেন অনবদ্য এক ইনিংস। ৮১ বলে পূর্ণ করেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৯২ বলে করেন ১১৭ রান। এতে সৌম্য হাঁকান ৯টি চার ও আধা ডজন ছক্কা। আর ম্যাচ শেষে সৌম্য বলেন, আসলেই আমার মাথায় চাপ বা ও রকম কিছু ছিল না। আমি চিন্তা করেছি, আজ যদি খারাপ খেলি, হয়তো খারাপই হবে। খারাপই যাচ্ছিল সময়টা (আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে), আজও যেতে পারতো। ওই জিনিস নিয়ে ভাবিনি। বরং মনে হয়েছে, খারাপ যখন যাচ্ছে, আরেকটা ম্যাচ খারাপ গেলে যাবে, এ-ই তো। সমস্যা নেই। আরো কিছু কথা বাড়বে, সমস্যা কী! চিন্তা করেছি, নিজের খেলাটা খেলি। ভালো হলে বাহবা দেবে, খারাপ হলে সবাই খারাপ বলবে।