‘মামুন মিয়া যে ফ্লাইং কিকটা মারছে না!’
ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই আবাহনী লিমিটেডের প্রায় হাজারখানেক দর্শক মাঠে নেমে এসেছিলেন। ওই ভিড়ের মধ্যে কেউ সেলফি তুলতে ব্যস্ত কেউবা খুঁজছেন জয়ী খেলোয়াড়দের। কিন্তু সবার মুখেই কিছুক্ষণ আগে মাঠে হয়ে যাওয়া মারামারির গল্প। সেই ভিড় থেকেই ভেসে এল ফ্লাইং কিক দেখে মুগ্ধ দর্শকের উচ্ছ্বাস! ৩-১ ব্যবধানে ফাইনাল জিতে আবাহনীর ফেডারেশন কাপ জেতার গল্পটা তাই আড়ালে চলে গেল।
দুর্ভাগ্য বলতেই হবে। কী অপূর্ব ফুটবলই না খেলছিল দুই দল। কোথায় দর্শকদের মুখে মুখে ঘুরবে কলিন্দ্রেস, সানডেদের দুর্দান্ত গোল বা সোহেল রানার একক নৈপুণ্য ভরা সে দৌড়ের গল্প। সেখানে বারবার উঠে আসছে মারামারির কলঙ্কের গল্প। শিরোপার লড়াইয়ে উত্তেজনা থাকবে, তাই বলে পুরোদস্তুর মারামারি! রেফারি মিজানুর রহমানকে তো শেষ পর্যন্ত লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দিতে হলো চার খেলোয়াড়কে। মাঠ ছাড়েন বসুন্ধরার সুশান্ত ত্রিপুরা ও তৌহিদুল আলম সবুজ এবং আবাহনীর নাবীব নেওয়াজ ও মামুন মিয়া। শেষের তিনজনই মাঠে নেমেছিলেন বদলি হিসেবে।
উত্তেজনা শুরু হয় ৮৮ মিনিটে। আবাহনীর সানডেকে থামাতে গিয়ে ফাউল করেন নাসিরউদ্দীন চৌধুরী। ফুটবলে এমন ফাউল সচরাচরই দেখা যায়। কিন্তু আজ এখান থেকেই শুরু হয় শরীর নির্ভর উত্তেজনা। পরক্ষণেই দুই দলের খেলোয়াড়েরা জড়িয়ে পড়েন বড় পর্যায়ের মারামারিতে। বল দখলের লড়াইয়ে ছিলেন আবাহনীর স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন ও বসুন্ধরার ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা। বল দখলের লড়াইয়ের একপর্যায়ে সুশান্তকে ঘুষি মারেন জীবন। পাল্টা বল ছাড়াই জীবনকে লাথি মারেন সুশান্ত। পাল্টা জবাব দিতে অনেক দূর থেকে দৌড়ে এসে সুশান্তকে ফ্লাইং কিক মারেন আবাহনীর ডিফেন্ডার মামুন মিয়া।
প্রেস বক্স থেকে দেখে মনে হচ্ছিল কিক বক্সিংয়ের কোনো হাইলাইটস। পরে মামুন মিয়ার ওপরে লাফিয়ে পড়েন বসুন্ধরার তৌহিদুল আলম সবুজ। এই মারামারি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে দুই দলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাগ আউট থেকেও কোচিং স্টাফদের নেমে পড়তে হয় মাঠে।
এই মারামারির পেছনে আবাহনীর খেলোয়াড়দের দিকে আঙুল তুলেছেন বসুন্ধরা কোচ অস্কার ব্রুজোন, ‘শুরুটা করেছে আবাহনীর এক খেলোয়াড় (নাবীব নেওয়াজ জীবন)। পরবর্তী সময় যা দুই দলের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে।’
অন্যদিকে দুই দলের খেলোয়াড়দেরই দায়ী করেছেন আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু, ‘দুই দলের খেলোয়াড়েরাই মেজাজ হারিয়েছে। আমাদের ফুটবলাররাও মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। এমন ঘটনা কাম্য নয়।’