যোশির চোখে সাকিব ‘বিশ্বসেরা’ ওয়ানডে ক্রিকেটার

স্পিন শক্তির বাংলাদেশ! মোহাম্মদ রফিক, আবদুর রাজ্জাক, এনামুল হক জুনিয়ররা দারুণ স্পিনার হলেও বড় দলের জন্য হতে পারেননি ভয়ের কারণ। এরপর আরো অনেক স্পিনার এসেছেন কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল দিতে পারেননি ইলিয়াস সানি, আরাফাত সানি, সোহাগ গাজীরা। টিকে গেছেন শুধু সাকিব আল হাসান। তবে শুধু বল হাতে তিনি কতটা টিকতে পারতেন তা নিয়েও আছে সন্দেহ। মূলত অলরাউন্ডার হিসেবেই সাকিব এখন যেকোনো দলের ভয়ের কারণ। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের মতো তরুণ অফস্পিনার। আছেন তাইজুলের মতো পরিশ্রমী স্পিনারও। সব শেষ সংযোজন নাঈম হাসান। যাদের ওপর ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে চার স্পিনার নিয়ে মাঠে নামে টাইগাররা।এমনকি সিরিজের শেষ টেস্টে রাখা হয়নি কোনো পেসারও। তাতে এসেছে অভাবনীয় সাফল্য। মূলত স্পিনে ফের সাফল্যের নেপথ্যের কারিগর বলা হচ্ছে স্পিন কোচ সুনীল যোশিকে। লম্বা সময় ধরেই নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন ভারতের সাবেক স্পিনার। গতকাল সংবাদমাধ্যমে মুখোমুখি হয়ে তুলে ধরেন টাইগারদের নিয়ে তার ‘অন্য’ রকম বিশ্বাসের কথা। দলের বোলিং শক্তি নিয়ে সুনীল যোশি বলেন, ‘দেখুন সাদা বলের ক্রিকেটে আমরা খুবই শক্ত। টি-টোয়েন্টি কিংবা ৫০ ওভারের, আমরা অনেক শক্তিশালী এবং আমরা উচ্চমানের দক্ষতার পর্যায়ে আছি।’
টেস্টে চার স্পিনার নিয়ে খেলার দারুণ সাহস দেখিয়েছে বাংলাদেশ। তবে বিদেশের মাটিতে বাস্তাবতা একেবারেই ভিন্ন। আর বিষয়টি ভালোভাবেই জানেন স্পিন কোচ যোশি। স্বীকারও করে নিলেন তিনি। যোশি বলেন, ‘আমার মনে হয় যখনই দেশের বাইরে যাবেন কন্ডিশন সবসময়ই কঠিন থাকে। বিশেষ করে স্পিনারদের জন্য। আপনাকে কন্ডিশনগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেয়াটা জরুরি, নিজের মনোভাবটাও বদলানো জরুরি। প্রতিটি ফরমেটেই আপনার মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। যখন আপনি লাল বলে খেলবেন তখন আপনার মনোভাব ভিন্ন হবে এবং সাদা বলের ক্রিকেটে হবে অন্যরকম।’ বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখ হতে হচ্ছে স্পিন কোচকে। তবে তিনি মনে করেন এখনো আসল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হননি তিনি। যোশি বলেন, ‘বাংলাদেশের হয়ে এখনও আমার চ্যালেঞ্জ আসেনি। আমাদের চ্যালেঞ্জটা শুরুই হয়নি। আমি স্পিনারদের নিয়ে সময়টা উপভোগ করছি এবং তারা অনেক ভালো করছে। আমরা নাঈমকে খেলিয়েছি এবং নাঈম টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করেছে। পাকিস্তানেও ইমার্জিং দলের সঙ্গে ভালো করছে এবং গতকাল কয়েকটি উইকেটও পেয়েছে। তাই আরও স্পিনার পাওয়াটা আমাদের জন্য বেশ ভালো।’
অন্যদিকে দলের সেরা স্পিনার সাকিবকে নিয়ে তার প্রত্যাশার শেষ নেই। এমনকি সাকিবকে শুধু বাংলাদেশই নয় বিশ্বের সেরা একজন ক্রিকেটার বলতেও দ্বিধা নেই যোশির। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় সাকিব শুধু আমাদের জাতীয় মর্যাদা ও মেধাই নয়, আপনি তাকে বলতে পারেন বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা ক্রিকেটার। তার অবস্থান নিয়ে আমি কিছু বলছি না, আপনি যদি তার গুণাগুণের দিকে লক্ষ্য করেন, আমি তার গুণের দিকে তাকিয়েই বলছি বোলার, ফিল্ডার ও ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি দুর্দান্ত প্রতিভাধর, দক্ষতাসম্পন্ন খেলোয়াড়। এমনকি আমি বলব তার দক্ষতা দেখাতে মাত্র কয়েক সেশনই যথেষ্ট। সময় মতোই তা দেখা যায় এবং একই সঙ্গে সঠিক জায়গায় জ্বলেও ওঠে। আর এটাই আমরা সাকিবের মধ্যে পাই এবং দলের ভেতর-বাইরে তিনি প্রচুর কৌশলী সক্ষমতাসহ অনেক অভিজ্ঞতা বয়ে এনেছেন। আর সেটাই দলকে অনেক লাভবান করে তোলে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *