জাবিতে ‘মাদক পার্টিতে’ তুলকালাম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে চলছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে ভিসিসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অতিথি হয়ে এসেছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালে ভেসে আসে গাঁজার উৎকট গন্ধ। উৎস অনুসন্ধানে নামে প্রক্টরিয়াল বডি। পাশেই পাওয়া যায় কয়েক শিক্ষার্থী একসঙ্গে বসে গাঁজা টানছে। এদের আটকের পর আশপাশে অভিযান চালিয়ে এমন আরো কয়েকটি গ্রুপকে পাওয়া যায়- যারা মাদক সেবনের আসরে মত্ত ছিল। তাদের ১০ জনকে প্রক্টরিয়াল বডি আটক করে। মাদকসেবনকারীদের আরো কয়েকজন পালিয়ে যায়।আটককৃতরা ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় তোলপাড় চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।

আটকদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির এক ছাত্রী, ফার্সি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির আরেক ছাত্রী, এমআইএস, স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের আরেক ছাত্রী, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের দুই ছাত্র। পরে তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা শাখার সদস্যরা ক্যাম্পাসে টহলরত অবস্থায় আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তমঞ্চের আশপাশে ও কেন্দ্র্রীয় খেলার মাঠে হাতেনাতে মাদক সেবন অবস্থায় আটক করে নিরাপত্তা শাখা অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের ভুল স্বীকার করেন এবং ভবিষ্যতে এরকম ঘটনার সঙ্গে জড়িত হবে না বলে প্রতিজ্ঞা করেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের ৭ম ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, গতরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডসহ ৮ জন, গাঁজা, ইয়াবার প্যাকেট, মদ, সীসা খাওয়ার সরঞ্জামসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিরাপত্তা শাখা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসে এদের অনেককে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘মুক্তমঞ্চে কনসার্ট চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি মঞ্চে ছিলেন। আমরা টহল দিয়ে দেখি অনেকগুলো টিম গাঁজা ও মদ খাচ্ছিল। কয়েকটা গ্রুপকে ধরে সতর্ক করে ছেড়ে দেই। যাদের অধিকাংশই বহিরাগত। পরে আবার মাঝরাতে তারা বটতলায়ও ছিল।’ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ করেন বহিরাগতদের নিয়ে এসে যেন ক্যাম্পাসকে মাদকের আখড়া বানানো না হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধও জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *