গতকাল পাওয়া গিয়েছিল চুয়াডাঙ্গার মাদ্রাসাছাত্র আবির হোসাইনের (১১) মস্তকবিহীন লাশ। এ নিয়ে চারদিকে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় রটে যায় এটা ‘ছেলেধরা’দের কাণ্ড। কিন্তু সেই রটনাকে মিথ্যা প্রমাণ করে পাওয়া গেলো আবিরের কাটামাথা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১০টার দিকে খুলনার একটি ডুবুরিদল মাদ্রাসা সংলগ্ন পুকুর থেকে মাথাটি উদ্ধার করে।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান জানান, বুধবার সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে আলমডাঙ্গার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের একটি ইটভাটার পাশ থেকে আবির হোসাইনের মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকেই খণ্ডিত মাথা উদ্ধার এবং হত্যা রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে জেলা পুলিশ। খবর দেয়া হয় র্যাব হেডকোয়ার্টারে।
খবর পেয়ে বুধবার বিকালেই র্যাবের একটি দল ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। শুরু হয় অনুসন্ধান। পরে খুলনা থেকে আসে ডুবুরি দল। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তারা ঘটনাস্থলের আশপাশের পুকুরে অনুসন্ধান শুরু করে। একপর্যায়ে মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি পুকুরে মাদ্রাসা ছাত্রের খণ্ডিত মাথা পাওয়া যায়।
ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের পুলিশ সুপার জানান, সাম্প্রতিক গুজবের সঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের কোনো সর্ম্পক নেই। হত্যাকারী সুকৌশলে হত্যার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই ওই ছাত্রের মাথা কেটে পুকুরে ফেলে দেয়। বর্তমানে পুলিশ হত্যাকারীকে শনাক্তের কাজ করছে। ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদ্রাসার পাঁচ শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহ বলেন, ইতিমধ্যেই নিহত মাদরাসা ছাত্রের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তে নিয়োজিত চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ওই ছাত্রকে দীর্ঘদিন ধরে যৌন নির্যাতন করা হতো। নির্যাতনের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্যই তাকে হত্যা করা হতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবির জানান, প্রাথমিকভাবে মাদ্রাসা ছাত্রের শরীরে যৌন নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে। বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে নিহতের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।