কক্সবাজারের উখিয়ায় একই পরিবারের ৪ সদস্যকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহতদের মধ্যে বউ-শাশুড়ি ও ২ শিশু রয়েছে। গতকাল সকাল ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পুলিশ বাড়ির চারদিকে দরজা জানালা বন্ধ দেখে ছাদের সিঁড়ি দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত মৃতদেহগুলো হলো- মৃত প্রবীণ বড়ুয়ার স্ত্রী সখি বড়ুয়া (৬৫), রোকেন বড়ুয়ার স্ত্রী মিলা বড়ুয়া (২৪), শিশু রবিন বড়ুয়া (৫) ও সনি বড়ুয়া (৬)। রত্নাপালং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্বরত্না এলাকার কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়ার বাড়িতে মর্মান্তিক এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান, উখিয়া থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. আবুল মনসুর ও বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দীপংকর বড়ুয়া পিন্টুসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীরা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় সকালে তাদের বাড়ির কাউকে দেখতে না পেয়ে বাড়িতে গেলে ভেতর থেকে তালা লাগানো দেখতে পায়। এ সময় বাড়ির খোলা জানালা দিয়ে উঁকি দিলে বাড়ির বৃদ্ধা সখি বড়ুয়ার লাশ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে বাড়ির ভিতর অন্য একটি রুমে কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়ার স্ত্রী মিলা বড়ুয়া, শিশু অমিন বড়ুয়া ও সনি বড়ুয়াসহ তিনজনের গলা কাটা অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়। রত্নাপালং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোক্তার আহমদ হত্যাকাণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে বাড়ির সিঁড়ি ঘর দিয়ে প্রবেশ করে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এই হত্যা কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তা এখনো জানা যায় নি। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল মনসুর জানান, লাশগুলো ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ঠিক কি কারণে এবং কোন সময়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে এ তথ্য জানাতে পারেননি তিনি।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, হত্যাকাণ্ডের অনেক ক্লু ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে, তবে তদন্তের স্বার্থে এসব ক্লু প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। শিগগির হত্যাকাণ্ডের মূল ক্লু বের করা যাবে। প্রাথমিকভাবে তিনি এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করেছেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যে সিআইডির ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেছেন। পিবিআই-এর ফরেনসিক টিমও চট্টগ্রাম থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। এদিকে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের খবর জানাজানি হলে সকাল থেকে শত শত লোক ঘটনাস্থলে জড়ো হতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকজনের ভিড়ও বাড়ে।