জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি আবদুল মাজেদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। শনিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়। কেরাণীগঞ্জের নতুন এই কেন্দ্রীয় কারাগারে এটিই প্রথম ফাঁসির ঘটনা ঘটলো।
কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আবদুল মাজেদকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বাটামারা গ্রামের নিজ বাড়িতে তার বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে।
তার আগে কারাগারের একজন জমাদার বলেন, মাজেদের ফাঁসির জন্য সবকিছু আগেই প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল। যেহেতু এই কারাগারে এর আগে কোনো ফাঁসি কার্যকর করা হয়নি সেহেতু কয়েক দফায় ট্রায়াল দেওয়া হয়েছে। ফিলিপাইন থেকে আনা ফাঁসির রশিতে পিচ্ছিল জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে। ১০ সদস্যের জল্লাদ টিমের কার কী দায়িত্ব তা মহড়ার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুই দফা এবং আজ শনিবার আরও এক দফায় মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
কারা সূত্রে জানা গেছে, আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করতে জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি জল্লাদ টিম কাজ করেছে। এদের মধ্যে মো. আবুল হোসেন, তরিকুল ইসলাম ও সোহেল রানা ঢাকা কোন্দ্রীয় কারাগারের কয়েদী। টিমের বাকি সদস্যদের নরসিংদী ও কাশিমপুর কারাগার থেকে আনা হয়েছে।
মাজেদের সাথে পরিবারের ৫ সদস্যের একটি দল গতকাল শুক্রবার (১০ এপ্রিল) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাৎ করেছেন। এর মধ্যে স্ত্রী সালেহা, স্ত্রীর বোন ও বোন জামাই, ভাতিজা ও একজন চাচাশশুর ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ৭ এপ্রিল (মঙ্গলবার) ভোরে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মাজেদকে মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ৮ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা জজ আদালত মাজেদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন। পরোয়ানার সেই কপি কারাগারে যায় এবং মাজেদ প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারী এই মাজেদ দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক ছিলেন।