মাহমুদ মন্ডল, স্বদেশ নিউজ২৪.কম : রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার যশাই ইউনয়নের চেয়ারম্যানের গুদাম থেকে আটককৃত চার মেট্রিক টন চাউল ত্রাণের নয়। এগুলো কাবিখা কাজের জন্য বরাদ্দকৃত চাল।
জানা গেছে, চাল উত্তোলনের পরদিনই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছেই তা মজুত থেকে যায়। যা উপজেলা চেয়ারম্যান সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে অবগত করে নিজ হেফাজতে রাখেন যশাই ইউনয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান মন্ডল।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত না করে গত ১৯ এপ্রিল পাংশা থানা পুলিশ যশাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের গুদাম থেকে চার মেট্রিক টন চাল উদ্ধার করে। পুলিশ কোনো প্রমাণপত্র বা চেয়ারম্যানের সাথে কথা না বলেই ওই চাল ত্রাণের জন্য উত্তোলনকৃত বলে প্রচারণা চালায়। পরে তা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের অবগত করে। ফলে সারাদেশে হৈ চৈ পড়ে যায়।
এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে সরেজমিন গিয়ে ঘটনার ভিন্ন রূপ দেখা যায়। সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, উদ্ধারকৃত চাল আসলে ত্রাণের নয়। এগুলো যশাই ইউনয়নের চরদুর্লভদিয়া বিরু মন্ডলের ঘাট মাটির রাস্তা হতে কালামের বাড়িমুখী রাস্তা সংস্কার কাজের কাবিখার জন্য বরাদ্দকৃত চাল।
এদিকে চাউল আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে যশাই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের মাঝে। তারা কোনোভাবেই এ অভিযোগ মেনে নিতে নারাজ।
যশাই ইউনিয়নের বাসিন্দা শুকুর আলী বলেন, চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান মন্ডল খুব ভালো মানুষ। তাকে গরীবের বন্ধু বলা হয়। তিনি কখনো গরীবের চাল আত্মসাত করতে পারে না। তিনিসহ যশাই ইউনিয়নবাসী ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
যশাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান মন্ডল বলেন, আমার ইউনিয়নে কাবিখার কাজ চলমান থাকাকালে আমি চার মে: টন চাউল উত্তোলন করি। উত্তোলনের পরদিনই লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পাংশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নিবাহী অফিসার, খাদ্য কর্মকর্তা, ট্যাগ অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবগত করে আমি চাল নিজ হেফাজতে রেখে দেই।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কাউকে না জানিয়ে পাংশা থানা পুলিশ ১৯ এপ্রিল দুপুরে চালগুলো থানায় নিয়ে আসে। পরে তা আত্মসাত করা ত্রাণের চাল বলে অপপ্রচার চালায়।
পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরিদ হাসান ওদুদ বলেন, লকডাউনের কারণে যশাই ইউনিয়নের কাবিখার কাজ বন্ধ থাকায় উত্তোলনকৃত চাউল আটকা পরে যায়। ফলে আমাকে অবগত করে যশাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান মন্ডল চাল নিজ হেফাজতে রেখে দেয়। কোনো প্রকার চুরি বা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি।
পাংশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার লাবীব আব্দুল্লাহ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ চার মেট্রিকটন চালসহ একজনকে গ্রেফতার করে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানসহ দু’জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।