দেশের বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির বিষয়ে সরকার জনগণকে মিথ্যা পরিসংখ্যান দিচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে যারা দেশ শাসন করছে তারা পুরো ফেক, প্রতারক। তারা রিজার্ভের যে ৪৬ বিলিয়ন ডলারের কথা বলছে এটা ফিফটিন পারসেন্ট বাড়িয়ে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। এটা একটা ভুয়া সংখ্যা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তার চাইতে প্রায় সাত বিলিয়ন ডলার কম।
আজ বুধবার বিকেলে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কৃষক দলের সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। এতে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘সরকার বলছে মাথাপিছু আয় বেড়েছে। তাই যদি হবে আমার শফিউদ্দিন ভাই তিনি আত্মহত্যা করলেন কেন? এভাবে আপনি যদি লক্ষ করেন দেখবেন প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকার যারা আজকে জোর করে ক্ষমতায় এসছে তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বন্দুক পিস্তল নিয়ে তারা জোর করে মানুষের অধিকারকে কেড়ে নিচ্ছে, মিথ্যাচার করছে। ‘
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার কথায় কথায় উৎপাদনের কথা বলছে, উন্নয়নের কথা বলছে। এমন মনে হয়, যেন উন্নয়নের দাপটে বাংলাদেশের সব কিছু তারা সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ গতকালই আমরা দেখেছি কৃষি খাতে শস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে এখনো ৬৭ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে। যেটা প্রমাণ করে তারা যে সমস্ত দাবি করে যে তারা খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ করেছে এটা সম্পূর্ণ একটা ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছু না। আসলে আওয়ামী লীগের চরিত্রই এটা।
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কৃষক ভাইদের সরকার চরম বিপাকের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আপনাদের মনে আছে, তারা সরকার বলেছিল ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াব। তারা কি খাইয়েছে? এখন কত? ৬০/৭০ টাকা। কৃষক ভাইদের বলেছিল. আমরা বিনা পয়সায় সার দেব। বিনা পয়সায় কি সার দিয়েছে? এখন তিন-চার গুণ সারের দাম।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রত্যেকটা জিনিসের দাম ১০-১৫ গুণ বেড়ে গেছে। গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ তার দাম বেড়ে গেছে। মানুষ এখন আজ বিক্ষুব্ধ, তার দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে পড়েছে। এই অবস্থা থেকে মানুষ বেরিয়ে আসতে চায়।
সংগঠনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘শিগগিরই কর্মসূচি দেওয়া হবে। সেই কর্মসূচিতে যেন আমরা যেন কৃষকদের সম্পৃক্ত করতে পারি তার চেষ্টা আমাদের করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের এই অন্ধকার কেটে যাবে, আলো সামনে এসে দাঁড়াবে এবং আমরা অবশ্যই জয়ী হব। ‘
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে কৃষক দলের হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, গৌতম চক্রবর্তী, মোশাররফ হোসেন, ওমর ফারুক শাফিন, ওবায়দুর রহমান টিপু প্রমুখ বক্তব্য দেন।