মহান আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম ‘শাকির’, যার অর্থ কৃতজ্ঞতা আদায়কারী। পবিত্র কোরআনে ‘শাকির’ ও ‘শাকুর’ শব্দে আল্লাহর এই গুণ বর্ণনা করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করলে আল্লাহ তো গুণগ্রাহী (পুরস্কারদাতা), সর্বজ্ঞ। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৫৮)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ গুণগ্রাহী, ধৈর্যশীল। (সুরা : তাগাবুন, আয়াত : ১৭)
সাধারণ অর্থে কৃতজ্ঞতা বোঝায় কারো কোনো অনুদান ও অনুগ্রহ স্বীকার করে কিছু বলা বা করা। কিন্তু মহান আল্লাহর প্রতি যেহেতু কারো কোনো অনুগ্রহ বা দান নেই, তাই তাঁর শাকির নামের অর্থ হবে বান্দার ভালো কাজের মূল্যায়ন করা, প্রতিদান দেওয়া, গুণগ্রাহী হওয়া। হাদিসেও এই অর্থের প্রতি ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোনো এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল। তখন সে খুব তৃষ্ণার্ত হলো এবং একটি কূপ দেখতে পেয়ে তাতে নেমে পড়ল। অতঃপর পানি পান করে বেরিয়ে এলো। ওপরে ওঠার পর দেখতে পেল, (তৃষ্ণায় কাতর) একটি কুকুর জিভ বের করে হাঁপাচ্ছে আর মাটি চাটছে। লোকটি ভাবল, কুকুরটির আমার মতো তীব্র তৃষ্ণা পেয়েছে। সে কুয়ায় নামল এবং তার মোজায় পানি ভরল। তারপর সে তার মুখ বন্ধ করে ওপরে উঠল এবং কুকুরটিকে পান করাল। মহান আল্লাহ তার কাজের মূল্যায়ন করলেন এবং তাকে মাফ করে দিলেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৭৫২)
আল্লামা জাজ্জাজি (রহ.) বলেন, ‘যখন বান্দার নেক আমলের প্রতিদান দেন এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আমলের বিপরীতে সওয়াব দান করেন, তাঁর দরবারে কোনো আমলকারীর আমল নষ্ট হয় না, তখন আল্লাহ অবশ্যই বান্দার গুণগ্রাহী ও পুরস্কারদাতা। ’ (ইস্তিকাকু আসমায়িল্লাহ, পৃষ্ঠা ৮৭)
তবে ‘শাকির’ শব্দের তুলনায় ‘শাকুর’ শব্দের অর্থের দৃঢ়তা পাওয়া যায়। আল্লামা বায়হাকি (রহ.) বলেন, “শাকুর যিনি ছোট আমলের বিপরীতে বড় প্রতিদান দেন। আর আল্লাহর ‘শোকর’ আদায়ের অর্থ হলো বান্দার নেক কাজের প্রশংসা করা এবং উত্তম প্রতিদান দেওয়া। ” (আল ইতিকাদ, পৃষ্ঠা ৫৯)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া