আমরা না বুঝেই অনেক সময় ওষুধ খেয়ে নেই। এতে সাময়িক উপশম হলেও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি হয়। সবচেয়ে বেশি ভোগে আমাদের কিডনি। কী কী কারণে কিডনির উপরে ওষুধের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে সে বিষয়ে জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
অনেক সময় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো রোগের নিরাময় না হলে ডাক্তার পাল্টানো, ফার্মেসি থেকে কিনে ওষুধ খাওয়া, বিকল্প ওষুধ খাওয়া, লোকজ অপরীক্ষিত ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
গ্রাম দেশে এখনো স্টেরয়েড গ্রহণ চলে, শশার বীচি আকৃতির এই ওষুধ খুব চালু। রোগী অনেক সময় নিজেই করেন নিজের ডাক্তারি। অনেক সময় ন্যাচারাল হারবাল সাপ্লিমেন্টের আড়ালে থাকে স্টেরয়েড।
জেনে রাখা ভালো, ওষুধ ব্যবস্থাপত্র দেখে কেনা হোক বা ফার্মেসি থেকে নিজে নিজে কেনা হোক, সব ওষুধই কিডনি দিয়ে ভ্রমণ করে। ভুলভাবে এবং অতিরিক্ত খেলে প্রধান দেহ যন্ত্র কিডনির ক্ষতি হয়।
৩০ বছর আগের তুলনায় এখন মানুষের ক্রনিক রোগ যেমন বেড়েছে তেমনি রোগ নির্ণয় পরীক্ষা, ওষুধ খাওয়া বেড়েছে। এগুলোর মধ্যে কিছু ওষুধ ক্ষতি করছে কিডনির।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০ শতাংশ কিডনি বিকল হয় ওষুধের জন্য। একে বলে নেফরোটকসিসিটি। বয়স্কদের মধ্যে এটা বেশি দেখা যায়। আর এমন ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া ভীষণ ব্যয়সাধ্য ব্যাপার।
কিডনির ক্ষতি করে এমন ওষুধের মধ্যে আছে বেদনা নাশক ‘নন স্টেরয়েডেল অ্যান্টি ইনফলামেটরি ড্রাগস বা এনএসএআইডি। কিডনি বিকল হওয়ার কারণের মধ্যে আরও আছে এইচআইভির ওষুধ, অ্যান্টিভাইরাল যেমন এসাইক্লোভির। অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারও কিডনির ক্ষতি করে।
করণীয়
► ফার্মেসি থেকে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ কিনে খাবেন না
► লোকজ অপরীক্ষিত ওষুধ খাবেন না
► সম্ভব হলে দীর্ঘ সময় এনএসআইডি খাবেন না
► ব্যথা কমানোর ওষুধ না খেয়ে বরং যত দূর সম্ভব সহ্য করুন
► ইচ্ছামতো বার বার ওষুধ খাবেন না বা শক্তিশালী ওষুধ এড়িয়ে চলুন।
► কিডনির ক্ষতি এড়াতে দেহের বিষ নির্গমনে প্রচুর পানি পান করুন
► গর্ভকালে এনএসআইডি খাওয়া উচিত না
► মদ্যপান বর্জন ভালো
কিছু ওষুধ গ্রহণ করলে কিডনি নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা দরকার। প্রয়োজন বুঝে ডাক্তর করতে পারেন ইজিএফআর।