প্রতি ৪ দিনে একটি কলেজ অনুমোদন

প্রতিষ্ঠার পর বিগত ২২ বছরের প্রতি ৪ দিনে একটি করে কলেজ অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের অধীনে বিভিন্ন ধরনের ২২৫৭টি কলেজ আছে। অথচ ১৯৯২ সালে ৪৫৫টি কলেজ নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে।

নির্বিচারে গ্রামে-গঞ্জেও কলেজ বিশেষ করে অনার্স প্রোগ্রামের অনুমোদন দেওয়া হয়। ওইসব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও শিক্ষক নেই। আবার যে সংখ্যক শিক্ষক আছে, তাদের সবাই নিয়মিত বেতন-ভাতা পান না। তাই নিয়মিত ক্লাস আর শিক্ষা কার্যক্রম হয় না।

ফলে এই প্রতিষ্ঠানটির ডিগ্রির মান নিয়ে দেশের উচ্চশিক্ষার অ্যাপেক্স বডি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একাধিক বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রশ্ন তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, নতুন করে আর কোনো কলেজে অনার্স পাঠের অনুমোদন দেওয়া হবে না। গত দু’বছর ধরেই এই নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর কেন্দ্রে ওই সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য আরও বলেন, সরকার কর্মমুখী শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছে। সরকারি নীতি ও কৌশলের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পিজিডি (পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা) কোর্স চালু করবে। আর আপাতত অনার্সের পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। অবশ্য যুগোপযোগী, যুৎসই ও প্রয়োজনীয় বিষয়/বিভাগের প্রস্তাব এলে সেইসব বিভাগ খোলার অনুমতি দেওয়া হবে।

উপাচার্য বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে ৩৫ জনবলের পরিবার। ডিগ্রি পর্যায়ে প্রায় চার লাখ আসন কমানো হয়েছে। তিনি বলেন, এখন আসন আরও কমানো যায়। এটা একদিনের ব্যাপার। কিন্তু এতে উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশীদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। আসলে শিক্ষার্থীদের অনার্স বা ডিগ্রিতে না নিয়ে আমরা ধীরে ধীরে ডিপ্লোমা ও শর্ট কোর্সগুলোতে নিয়ে যেতে চাচ্ছি। সেটা রাতারাতি সম্ভব হবে না। আইসিটি, ল্যাংগুয়েজ, এন্টারপ্রেনারশিপ বাধ্যতামূলক করা হবে। এখনই কলেজে কলেজে দিচ্ছি না, কেন্দ্রীয়ভাবে শুরু করব।

যে ১২টি বিষয়ে এক বছরের পিজিডি কোর্স চালু করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেগুলো হচ্ছে-ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি), ল্যাংগুয়েজ ইংলিশ অ্যান্ড অ্যারাবিক, এন্টারপ্রেনারশিপ, ফার্মিং টেকনোলজি, ডাটা অ্যানালাইসিস, ট্যুরিজম অ্যান্ড ট্রাভেল ম্যানেজমেন্ট, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ক্যাপিটাল মার্কেট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, সার্টিফায়েড অ্যাকাউন্টিং টেকনিশিয়ান, সাইবার সিকিউরিটি এবং সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট। আইসিটি, এন্টারপ্রেনারশিপ এবং সফট স্কিল অনার্স ও ডিগ্রি পর্যায়ে বাধ্যতামূলক করা হবে। যেমন বাংলাদেশের অভ্যুদয় বাধ্যতামূলক রয়েছে।

অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘পিজিডি প্রোগ্রামগুলো শর্ট কোর্স হিসাবেও থাকবে। যাতে অনার্স ও ডিগ্রি পাসের সঙ্গে তারা একটি শর্ট কোর্সেরও সনদ পায়। তবে এগুলো বাস্তবায়ন করতে শিক্ষক প্রয়োজন হবে। সিইডিপিতে আমাদের একটা ফান্ড রয়েছে। ওই ফান্ড নিয়ে তাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। যেহেতু যাওয়া হয়নি, ওই ফান্ড এনে কিছু শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেব। আগামী বছরের শুরুর দিকে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। বাড়ি ভাড়া হয়ে গেলে আগামী বছরের জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারিতে শুরু করতে পারব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *