হাড়ক্ষয় (অস্টিওপোরোসিস) মানে হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া। এতে হাড় অনেকটা মৌচাকের মতো ছিদ্র হয়ে যায়। এতে সামান্য আঘাতে বা অনেক সময় বিনা আঘাতেই হাড় ভেঙে যেতে পারে। বয়স্ক ব্যক্তিদের মৃত্যু ও শয্যাশায়ী হওয়ার একটি বড় কারণ অস্টিওপোরোসিস জনিত হাড় ভাঙা।
সাধারণত ৫০ বছরের পর থেকে হাড় ক্ষয় বা এর লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। তবে বাস্তবে এ প্রক্রিয়ার শুরু হয় অনেক আগেই। একজন নারী বা পুরুষের হাড় সাধারণত ২৮ বছর বয়স পর্যন্ত ঘনত্বে বাড়ে। আর ৩৪ বছর পর্যন্ত তা অটুট থাকে। এরপর থেকে হাড় ক্ষয় পেতে থাকে। যত বয়স বাড়ে, হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি তত বাড়ে। এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে বাড়তি কিছু ঝুঁকি।
বয়স বৃদ্ধি ছাড়া অন্যান্য ঝুঁকি বেশি হলে দ্রুত হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে। নারীদের মেনোপজ বা মাসিক বন্ধ হওয়ার পর হাড় ক্ষয়ের গতি অনেক বাড়ে। এ ছাড়া বেশ কটি কারণ বা ঝুঁকি রয়েছে। যেমন- ধূমপান, বংশগতি, স্টেরয়েড হরমোনের ব্যবহার, থাইরয়েডের রোগ, কম বয়সে মেনোপজ, ভিটামিন ‘ডি’ বা ক্যালসিয়ামের অভাব, কিছু বাতরোগ, অলস জীবনযাপন ইত্যাদি।
হাড়ক্ষয় প্রতিরোধ
নিয়মিত সঠিক ব্যায়াম হাড়ক্ষয় রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। সব বয়সের মানুষেরই নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা দরকার। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এমন কিছু ব্যায়াম করা দরকার, যা হাড়ক্ষয় রোধ ও ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। রেসিস্ট্যান্স ব্যায়াম এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযোগী। যে কারও পক্ষে ও যেকোনো স্থানে এ ধরনের ব্যায়াম করা সম্ভব। আর ধূমপান অবশ্যই বাদ দিতে হবে। এ ছাড়া কিছু খাবার খেলে এর ঝুঁকি কমে।
সবুজ শাকসবজি
গাঢ় সবুজ শাকসবজি যেমন- বাঁধাকপি, ফুলকপি, শালগম ইত্যাদিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম রয়েছে, যা হাড়ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়তা করে। এ ছাড়া এসব সবজির ভিটামিন ‘কে’ অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমাতে পারে।
দই
এতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও কিছুটা ভিটামিন ‘ডি’; যা হাড় ক্ষয় প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
লেবুজাতীয় ফল
লেবুতে থাকা প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ হাড়ের কোলাজেন ও তন্তুময় অংশ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে।
সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ভিটামিন ‘ডি’, যা হাড়ের গঠনের জন্য খুব বেশি প্রয়োজন। মিঠাপানির মাছে ভিটামিন ‘ডি’ অতি সামান্যই পাওয়া যায়।
বাদাম
এতে রয়েছে ভিটামিন ‘ডি’ ও ক্যালসিয়াম, যা অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
দুধ
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’র সহজলভ্য উৎস দুধ। নিয়মিত দুধ খেলে হাড়ক্ষয় প্রতিরোধ করা যায়।