‘মানবিক’ পুলিশ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কনস্টেবল শওকত হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
গত ১৬ এপ্রিল তার চাকরিচ্যুতির আদেশে স্বাক্ষর করেন সিএমপির বন্দর বিভাগের উপকমিশনার শাকিলা সুলতানা। পরে সেই আদেশের কপি পাঠানো হয় সিএমপি কমিশনারের দফতরে।
চাকরিচ্যুতির আদেশে বলা হয়েছে, ৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া শওকত হোসেন শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় এবং বেওয়ারিশ মানুষ নিয়ে মানবিক কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। আর এমন বক্তব্য লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
জানা যায়, শওকত হোসেন নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা। তিনি ২০০৫ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। ২০০৯ সালে ঢাকা থেকে বদলি হয়ে রাঙামাটিতে যান। সেখান থেকে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে। তিনি চাকরির পাশাপাশি তিন বছরের ডিপ্লোমা এবং দুই বছরের প্যারামেডিকেল কোর্স সম্পন্ন করেন।
আরও পড়ুন: চকরিয়ায় পুলিশের এসআইসহ তিন সদস্যকে কুপিয়ে জখম, আটক ১৪
এ বিষয়ে সিএমপির উপকমিশনার (সদর) মোহাম্মদ আবদুল ওয়ারীশ বলেন, কনস্টেবল শওকত হোসেনের চাকরিচ্যুতির আদেশ হয়েছে। ৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিতির জন্য তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলে সে জানায়, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যার পাশাপাশি বেওয়ারিশ মানুষ নিয়ে মানবিক কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। এর পরেই তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
২০১৯ সালে তৎকালীন সিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমানের আদেশে মানবিক পুলিশ ইউনিটের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ওই সময় কমিশনার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন। বেওয়ারিশ মানুষদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে ইতিবাচক কার্যক্রমের মাধ্যমে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করায় তখন সংবাদমাধ্যমে পুলিশের এই উদ্যোগ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।
তবে শওকত হোসেন ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ডবলমুরিং থানা এলাকায় একটি মাহফিলে অতিথি হয়ে যান এবং বিতর্কিত বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্যের জেরে পরবর্তী সময়ে তাকে দামপাড়া বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল থেকে বদলি করে কর্ণফুলী থানায় পাঠানো হয়।