ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে একবারো রাশিয়ার বিপক্ষে আওয়াজ তোলেনি চীন। রাশিয়া ও ইউক্রেনের চলমান এ সংঘাতকে কখনই ‘যুদ্ধ’ আখ্যায়িত না করে বরং ‘সংকট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশটি।
কোনো কোনো বিশ্লেষকের দাবি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের এ দ্বন্দ্বকে চীন-তাইওয়ান দ্বন্দ্বের চোখে দেখছেন শি জিনপিং। রাশিয়া যেমন ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়াকে দখল করেছে। তেমনি চীনও তাইওয়ানকে একীভূত করতে চায়।
আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের এ ঝামেলায় সরাসরি জড়াতে চায় না চীন। নিজেদের যথাযথ দূরত্বে রাখতে চায় দেশটি।
কিয়েভের অনেকেই মনে করেন, এ যুদ্ধে চীন পরোক্ষভাবে রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে আসছে। তবে তা চীন নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই করছে।
যেভাবে ফায়দা লুটছে চীন
যদি রাশিয়া সরাসরি চীনকে সহায়তা করে তবে ইউক্রেন যুদ্ধে অবশ্যই রাশিয়া জিতবে। কিন্তু তা করছে না চীন। কূটনীতির মাধ্যমে ফায়দা লুটে নিচ্ছে দেশটি।
পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে বেইজিংয়ের কাছে বেশি তেল, গ্যাস, কয়েল রপ্তানি করছে মস্কো। এর ফলে লাভবান হচ্ছে চীন।
যুদ্ধ থামাতে কেন নিষ্ক্রিয় চীন?
ইউক্রেন যুদ্ধে গত ১৫ মাস ধরে স্থবির অবস্থানে আছে চীন। ভেস্তে গেছে দেশটির ১২ দফা শান্তি প্রস্তাব। গত মার্চে সৌদি ও ইরানের মধ্যে সমঝোতায় মধ্যস্থতা করেছে চীন। তবে ইউক্রেন-রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি অসম্ভব প্রায়। ইরান-সৌদি আরবের দুই পক্ষ সমাধান চাইলেও ইউক্রেন-রাশিয়ার কোনো পক্ষই ছাড় দিতে নারাজ।
তবে বেইজিংয়ের এ স্থবির অবস্থান বেশ লাভজনক বলে উল্লেখ করেছেন কিয়েভের বিশ্লেষক আইগার তিশকেভিচ। আলজাজিরাকে তিনি বলেন, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিচ্ছে। আর পরোক্ষভাবে এর ফল ভোগ করছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি দাবি করেন, একদিকে পশ্চিমারা রাশিয়ার পক্ষে সঞ্চিত শক্তি ব্যয় করছে, অন্যদিকে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞায় পড়ে কোণঠাসা হয়ে দিন দিন নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।
এভাবে বিশ্বের দুই মোড়ল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ধীরে ধীরে অস্তগামী সূর্যতে পরিণত হচ্ছে। আর এদিকে বিশ্বের উদীয়মান অপরাজেয় শক্তি হিসেবে রূপ নিচ্ছে চীন।