ফেনী প্রতিনিধি :
ফেনীতে নতুন করে এখন ভূমিদস্যুদের নাম্বার ওয়ান তালিকায় অর্ন্তভূক্ত হয়েছে বিএনপি নেতা ও কাউন্সিলর মোঃ ফারুকের নাম। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে সরকারি রেলের জায়গায় দখল করে ঘর নির্মাণ সহ প্রায় ১০ টি অভিযোগ তুলছে স্থানীয় এলাকাবাসি।
এদিকে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করে রাস্তা নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্ট মহল। অনেক হিন্দু তার ক্ষমতার ভয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। এসব অপরাধের পাশাপাশি মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন বিএনপির পরিচয়ে নামধারী এ কাউন্সিলর। শুধু তাই নয় স্থানীয় কাউন্সিল হওয়ার সুবাধে প্রতিদিনি সমাজে নানা ঘটনার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে এলাকার লোকজন তার নিকট যায় । এসময় সুবিধাভোগী এ কাউন্সিলর বিচার প্রার্থীদেরকে সু-বিচার করার আশ্বাসে তাদের কাছে থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার বাণিজ্য বাণিজ্য করেন। কোন কারণে পারিবারিক জায়গায়-জমিনের অভিযোগ পেলতো কোন কথাই নেই। দু’ পক্ষের কাছ থেকে বাণিজ্য করেন। এমনও অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
এছাড়া আরো অভিযোগ রয়েছে, তার এলাকার কয়েকজন গরীব পরিবারের সুন্দরী স্ত্রীদের সঙ্গে তার অবাধে মেলা-মেশা হয়। তাদেরকে অর্থের লোভ দেখিয়ে জিম্মি করে রাখেন তিনি। সামাজিক ভাবে তার বিরুদ্ধে কানা-ঘোষা চললেও জনপ্রতিনিধি হওয়ায় কেউ এর প্রতিবাদ করে না। সম্প্রতি এ কাউন্সিলর ফারুকের বিরুদ্ধে ভিতরে ভিতরে এলাকায়বাসী সোচ্চার হচ্ছেন। যে কোন সময় গণ বিস্ফোরণ ঘটতে পারে তারা।
সংশ্লিষ্ট্য সূত্র জানাগেছে, কাউন্সিলর ফারুকের শক্তিশালী নেট ওয়ার্ক থাকার কারণে এক পর্যায় স্থানীয় সরকারি দলের নেতা ও সন্ত্রাসীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। ফলে তার বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেন তাদের পরিণতি হয় ভয়াবহু। এজন্য কেউ তার অপরাধ জগতের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খলতে সাহস পাচ্ছে না। এছাড়া এলাকায় কিছু সৎ মানুষ এ কাউন্সিলেরের অপরাধ জগতকে দমন করার জন্য বহুদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসলে ও কেউ তাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না। এমন কথাই জানিয়েছেন তারা। গতকয়েকদিন আগে সাংবাদিকদেরকে ফারুকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন সমাজের সচেতন মহল।
এদিকে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এলাকা বাসি তুলছেন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ফেনী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের রেলওয়ের জায়গার উপর অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ। বিলোনীয় রেল- লাইনের জায়গায় দখল করে ৪ তলার একটি ছাত্রাবাস নির্মাণ করছে। পাশাপাশি একই জায়গায় নতুন করে আরেকটি স্থাপনা নির্মাণের কাজ করছেন তিনি। অপরদিকে ফেনী সদর হাসাপাতালের পিছনের উত্তর পাশ্বে এবং ফেণী কলেজ হোস্টেলের মাঝখানে ৪ একর জায়গায় লিজ না নিয়ে প্রায় এক যুগের মত চাষাবাদ করে আসছে। সরকারকে কোন রাজস্ব না দিয়ে অবৈধভাবে স্থানীয় সরকারি দলের লোকজনকে ম্যানেজ করে এ জায়গার চাষাবাদ করেন তিনি।
আরো অভিযোগ পাওয়া গেছে, ফেনী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সুলতানপুরের বিটপিকা অর্ন্তভুক্ত জায়গায়টি লীজ না নিয়ে মাছ ও ধান চাষ করে প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর যাবত। শুধু তাই নিজের জায়গায় সরকারি রাস্তায় থেকে রক্ষায় করে হিন্দুদের শ্বসানের মধ্যখানে জায়গা দখল করে রাস্তা নির্মাণ করছে এ ভূমিদসূ্যু। সুলতান পুর ও ফলেশ্বর গ্রামের সংলগ্নে পিঠাপাশারী ও মজিদ মিয়ার বিক্সফিল্ডের পাশ্বে ধানের আটো মেশিন ও পানি সেচের কাজে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছে। বিদ্যুৎের কর্মকর্তাদেরকে সামন্য টাকা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
এলাকাবাসি সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন, স্থানীয় আমিন কোম্পানীর বউ, মন্টু দালালের বউয়ের সঙ্গে তিনি অবৈধ মেলা মেশা করেন। এ পর্যন্ত তার কথিপয় ৩টি স্ত্রী রয়েছে। যাহা বাস্তবে কোন স্ত্রী নেই বলে একালাকার লোকজন জানায়। এসব অপরাধের করার পাশাপাশি মাদকের স্বর্গরাজ্য হিসেবে গড়ে তুলেন পুরো ফেনী শহর এলাকাকে। মাদক বাণিজ্যের ভয়ংকর ছোবলে স্থানীয় ভাবে যুব সমাজ এখন দিক হারিয়ে বিপদের দিকে দিক্ষিত হচ্ছে। দিনের বেলা যেমন মাদক ব্যবসা করেন। রাত্রির বেলায় পুরো ফেনী শহরের আশপাশের এলাকায় থেকে সমাজের উচ্চতর শ্রেনী থেকে নি¤œ শ্রেনীর মাদক সেবীরা এখানে মাদক সেবন করেন। স্থানীয় সন্ত্রাসীদেরকে হাত করে তিনি বিরিঞ্চি এলাকায়ে নিরাপদ রুট হিসেবে গড়ে তুলেন।
এ কাউন্সিল বিএনপির আমলে সাবেক সংসদ সদস্য ভিপি জয়নালের নাম ভাঙ্গিয়ে নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এখন নিজেই বড় গড়ফাদার হয়ে যান। তোয়াক্কা করেন না সমাজের কোন মানুষকে। টাকার গরমে জীবনটাকে মনে করেন পানি দুনিয়া। এলাকায় শালিসের নামে বাণিজ্য করেন কোটি কোটি টাকা। এছাড়া ওয়ান ইলেভেনের সময় স্থানীয় একটি সিএনটি স্টেশনের দেয়াল দিয়ে জনগণের পথ আটক করে চালচাতুরী দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করেন। এসব টাকা উদ্ধারের জন্য শিগরই ভুক্তভোগীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাউন্সিলর ফারুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ফেনীর পৌরসভার সদ্য নির্বাচিত দায়িত্ব প্রাপ্ত মেয়র আলাউদ্দিনের কাছে অভিযোগ করবেন বলে জানাগেছে।
ছউমে/ঢাকা/মাক/আজকের সময়