ঝগড়া থেকে দূরে থাকুন

quareel “ঝগড়া না করি যেন কভু কারো সনে, সকালে উঠিয়া এই বলি মনে মনে”
মদনমোহন তর্কালঙ্কারের ‘আমার পণ’ কবিতাটি আবার মনে করিয়ে দিতে চাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। নিয়মিত ঝগড়া করলে মধ্য বয়সেই বিদায় নিতে হতে পারে পৃথিবী থেকে।
প্রেয়সী-পরিবার-বন্ধু-স্বজন অথবা সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়া আমরা প্রায়ই করি। ঝগড়ার কোনও ভাল গুন নেই বলেই বলে থাকেন জ্ঞানী ব্যাক্তিরা। ঝগড়া করলে কেবল সম্পর্কের অবনতি এবং ব্যক্তিত্ব ক্ষুন্ন হয়। তবে এসবের সাথে যুক্ত হয়েছে নতুন একটি তথ্য। তারা বলছেন ঝগড়াটে মানুষের আয়ু দ্রুত কমে।

বেদনাদায়ক সামাজিক সম্পর্ক ও অকাল মৃত্যুর মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয়ে ৩৬-৫২ বছর বয়সী ৯৮৭৫ জন নারী ও পুরুষের ওপর পরিচালিত গবেষণা শেষে এ সতর্কতা দিয়েছেন ডেনমার্কের ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের গবেষকরা।

যুক্তরাজ্যের ‘জার্নাল অব এপিডেমিওলজি অ্যান্ড কমিউনিটি হেলথে’ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়মিত ঝগড়ার কারণে দ্রুত মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে এমন তালিকায় সর্বাগ্রে রয়েছেন মধ্যবয়স্ক পুরুষ ও বেকাররা।

গবেষণায় দেখা যায়, ক্রমাগত দুঃশ্চিন্তা বৃদ্ধি ও সাধ্যাতীত আবদার অন্য যেকোনো কারণের চেয়ে বেশি ৫০-১০০ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, উদ্বেগজনক লেনদেনও দ্রুত মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিত্ব ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা ও বাড়তি চাপ বেশি প্রভাব ফেলে।

তবে গবেষণায় জানানো হয়েছে, বেকাররা কোনো ধরনের সংঘাত-বিবাদে মধ্যস্থতায় সময় কাটালে এবং সামাজিক যোগাযোগ কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকলে তাদের এ ধরনের ঝুঁকি কমতে পারে।

গবেষণায় দাবি করা হয়, নিয়মিত ঝগড়া পুরুষ বা নারীর স্বাভাবিক মৃত্যুর চেয়ে দ্রুত মৃত্যুর হার দু’তিন গুণ বাড়িয়ে দেয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে পুরোপুরি কারণ ব্যাখ্যা করা না হলেও দাবি করা হয়, মাত্রাতিরিক্ত বিরক্তি, প্রেয়সী ও শিশুর সাধ্যাতীত আবদার এবং পরিবারসহ বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়ায় লেগে থাকলে হৃদরোগ এমনকি স্ট্রোকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। আর এটা মধ্যবয়সেই!

গবেষকরা দাবি করেন, ঝগড়ার ফলে মনস্তাত্ত্বিক ধাক্কায় মানুষের শরীরে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। উচ্চ রক্তচাপের মতো এ ধরনের প্রতিক্রিয়া হৃদরোগের ঝুঁকিতে ফেলে দেয় মানুষকে। যেটার পরিণতি দ্রুত মৃত্যু।

ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের পাবলিক হেলথ বিভাগের অধ্যাপক ড. রিকে লান্দ বলে, দুঃশ্চিন্তা ও ঝগড়া মানুষের জীবনেরই অংশ। তবে যারা সবসময়ই সংঘাত বা ঝগড়ায় লিপ্ত থাকে তাদেরই এ ধরনের ঝুঁকি বেশি থাকে।

ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টমিনিস্টারের সাইকোলজি অ্যান্ড পিজিওলজি বিভাগের অধ্যাপক অ্যাঞ্জেলা ক্লো বলেন, গবেষণার এ ফল বিস্ময়কর কিছু নয়। মানুষের স্নায়ুচাপ বাড়লে তার মৃত্যু ঝুঁকি বাড়বেই।

তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ কার্যক্রমে এবং বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় প্রাণবন্ত সময় কাটালে স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

গবেষকরা পরামর্শ দিয়ে বলেন, ভুল বোঝাবুঝি হলেও সবুজ পৃথিবীতেই শ্বাস ফেলার সময় দীর্ঘ করার দায় থেকে ঝগড়া এড়িয়ে চলতে হবে। ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *