গান্ধীর বড় ছেলে হরিলালকে লেখা ৩টি চিঠি আগামী সপ্তাহে নিলামে উঠতে যাচ্ছে। ১৯৩৫ সালে মহাত্মা গান্ধীর লেখা এ চিঠিগুলো অন্তত ৬০ হাজার পাউন্ড বা ১ লাখ মার্কিন ডলারে বিক্রি হতে পারে। ওই চিঠিতে গান্ধী তার বড় ছেলেকে জিজ্ঞেস করেছেন, সে এখনো মদাসক্ত হয়ে সময় বিনষ্ট করছে কি না। শর্পশায়ারে মুল্লকস অকশনার এ নিলামের আয়োজন করছে।
ছেলে হরিলালের কাছে লেখা চিঠিতে মহাত্মা গান্ধী তার বিরুদ্ধে ৮ বছরের নাতনিকে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। এবং তাকে জিজ্ঞেস করেন যে সে এখনো মদ ও লাম্পট্যে অভ্যস্ত কি না। একটি চিঠিতে ছেলে হরিলালকে গান্ধী লিখেছেন, তোমার সমস্যা সম্পর্কে তোমারই ভাল অবহিত থাকার কথা। এধরনের সমস্যায় আমার স্বাধীকার আন্দোলনে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। নাতনি মানুর নাম উল্লেখ করে গান্ধী লেখেন, সে আমাকে তোমার হাতে তার একাধিকবার ধর্ষণ হওয়ার কথা বলেছে। ৮ বছর বয়সে তাকে এতটা নির্দয়ভাবে তাকে তুমি ধর্ষণ করেছ যে তাকে ডাক্তারের কাছে যেয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।
আরেক চিঠিতে গান্ধী লিখেছেন, দয়া করে আমাকে সত্য জানাও। দয়া করে আমাকে জানাও তুমি এখনো মদ ও লাম্পট্যে মত্ত আছ কি না। আমার মনে হয় এসব কিছুতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ার চেয়ে তোমার মরে যাওয়া ভাল।
১৯৩০ সালের ১১ নভেম্বরে লেখা আরেক চিঠিতে গান্ধী বলেন. মেয়েরা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করে। তাদের জন্যে আমাদের অনেক কিছু করার আছে। আধুনিক বিশ্ব জানেনা ভারতের নারীদের কি পরিমাণ শক্তি রয়েছে। ভারতের নারীরা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে এবং আমি খুব মর্মাহত হব যদি ছেলে হয়ে তুমি এই মহৎ আন্দোলনে কোনো ভূমিকা না রাখ।
মহাত্মা গান্ধীর লেখা বেশির ভাগ চিঠিই ১৯৩৮ থেকে ১৯৪৪ সালের মধ্যেকার সময়ে লেখা এবং ভারতের স্বাধীকার আন্দোলনের নানা বিষয় এসব চিঠিতে উঠে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এসব চিঠি পাওয়া গেলেও তা বেশ ভাল অবস্থায় রয়েছে এবং এসব চিঠি গুজরাতি ভাষায় লেখা। হরিলাল তার পিতার মতই ব্যারিস্টার হতে বিলেতে লেখাপড়া করতে যেতে চাইলেও গান্ধী তাতে রাজি ছিলেন না। গান্ধী বিশ্বাস করতেন পশ্চিমা শিক্ষা ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে আন্দোলনে কোনো কাজে আসবে না।
গান্ধীর লেখা এসব চিঠি হরিলালের জীবনী লেখক ও গান্ধী আশ্রমে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে দেখানোর পর নিশ্চিত হওয়া গেছে যে চিঠিগুলো মহাত্মা গান্ধীর লেখা।