নাটোরের নলডাঙ্গা ও নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন৷ গতকাল সোমবার উপজেলা দুটিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷
নলডাঙ্গায় বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন ৩৫ হাজার ৩৪৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদেও বিএনপি-সমর্থিত জিয়াউর রহমান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি-সমর্থিত মহুয়া পারভিন বিজয়ী হন।
আর বন্দর উপজেলায় ১৯ হাজার ৫৪৩ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি-সমর্থিত আতাউর রহমান মুকুল। ১১ হাজার ১৩২ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন স্বতন্ত্র প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন প্রধান৷ সেখানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সাইফুল ইসলাম ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির মাহমুদা বেগম।
নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবার-সমর্থিত প্রার্থী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ নয় হাজার ৭৬১ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন। সম্প্রতি শামীম ওসমান এক সমাবেশে এম এ রশিদকে তাঁদের সমর্থিত প্রার্থী ঘোষণা করে তাঁর জন্য ভোট প্রার্থনা করেন।
নলডাঙ্গার প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত কেন্দ্র ছিল পিপরুল ইউনিয়নের পাটুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাশের আশ্রাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র৷ সকাল থেকে এই দুটি কেন্দ্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপি-সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে যেতে পাটুল বাজার ও মাদ্রাসা মোড়ে বাধা সৃষ্টি করেন৷
মাদ্রাসা মোড়ের আবদুল হাকিম জানান, ‘পিপরুল ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি শাহজালাল দেওয়ানের নেতৃত্বে পাটুল পূর্ব পাড়া ও হেজাতিপাড়ার মহিলা ভোটারদেরসহ আমাকে ভোটকেন্দ্রে যেতে না দিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছেন৷ আমরা বিএনপি-সমর্থক৷ তাঁদের ধারণা, আমরা ভোটকেন্দ্রে গেলে তাঁদের প্রার্থীর ভোট কমে যাবে৷’ সাংবাদিকদের পাশাপাশি তাঁরা উপস্থিত সেনাসদস্যদের কাছেও ভোট দিতে যেতে না দেওয়ার অভিযোগ করেন৷ তাঁদের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সেনাসদস্যরা পাটুল বাজার মোড় থেকে আওয়ামী লীগের নলডাঙ্গা উপজেলার সহসভাপতি জিয়াউল হক, পিপরুল ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি শাহজালাল দেওয়ান, আবদুল্লাহ আজিজ, সোহেল রানা, আনোয়ার হোসেন ও আবুল কালাম আজাদকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করেন৷ ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের এক হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করেছেন৷
আশ্রাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন বলেন, ‘আমার কেন্দ্রে মাত্র ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে৷ এর আগে এই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের হার ছিল ৮০ শতাংশের বেশি৷’
এদিকে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়৷ সিটি করপোরেশনের এলাকা বাদে মদনপুর, বন্দর, মুছাপুর, ধামগড় ও কলাগাছিয়া ইউনিয়ন নিয়ে এই উপজেলা গঠিত৷ সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ৫০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলে৷ তবে সরেজমিন কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে খুবই কম ভোটার উপস্থিতি দেখা গেছে৷ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দু্জন ও বিএনপির দুজনসহ মোট আটজন এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন৷
বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মিনারা নাজনীন জানান, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি