একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় জ্যেষ্ঠ নির্বাহীর কাজ করেন সায়মা বেগম। অফিসের প্রতি বিশেষ অনুরাগের কারণে বন্ধুমহলে খোঁটা খেতে হয় প্রায়ই। কিছুতেই অফিস কামাই করেন না। এ বছর জ্বরের জন্য ছুটি নিতে হয়েছে। জ্বরের সঙ্গে ভোগাচ্ছে খুশখুশে কাশি।
শুধু যে সায়মাকে ভুগতে হচ্ছে তা কিন্তু নয়। রাজধানীর প্রায় প্রতি ঘরেই জ্বর-জারি, ঠান্ডা-কাশি লেগেই আছে। বাচ্চা-বুড়ো কেউ বাদ যাচ্ছেন না। রাজধানীর ধানমন্ডির ৮ নম্বরের বাসিন্দা অমিয়া আনোয়ার নয় বছরের ছেলে তামিম জুবায়েরকে নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন বলে জানান। ছেলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছে, জ্বর ছাড়ছে না।
এক বাড়িতে একাধিক সদস্যের জ্বরে পড়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে।
তবে চিকিত্সকেরা জ্বরের প্রকোপ শিগগির কমবে এমন কোনো তথ্য দিতে পারছেন না। বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ সময়টা ইনফ্লুয়েঞ্জার। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার দেশে অত্যধিক গরম ও মাঝে মাঝে বৃষ্টির সময়টায় এই জ্বর হয়ে থাকে। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে আগস্ট পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর পিছ ছাড়বে না।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সাল থেকে আইইডিসিআর ইনফ্লুয়েঞ্জায় কত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে তার হিসাব সংরক্ষণ করে আসছে। মুশতাক জানান, তাঁদের প্রতিষ্ঠানের বেশ কজন চিকিত্সক, বিজ্ঞানী, কর্মকর্তাও জ্বরে ভুগছেন। অফিস করতে পারছেন না।
চিকিত্সকেরা বলছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গগুলো হলো জ্বর বা জ্বর জ্বর লাগা, কাশি, গলাব্যথা, নাক দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে থাকা, মাংসপেশি ও মাথাব্যথা, দুর্বল হয়ে যাওয়া। এর বাইরে শিশুরা জ্বরের সঙ্গে বমি ও ডায়রিয়ায় ভুগতে পারে।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক অনুপ কুমার সাহা খুব গরম এড়িয়ে চলার ও প্রচুর পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আর জ্বর যদি হয়েই যায়, তাহলে প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার ও প্যারাসিটামল খেতে বলেছেন। তবে তিনি আরও বলেছেন, জ্বরের সঙ্গে যদি ইনফেকশন যুক্ত হয়, তাহলে একটা অ্যান্টিবায়োটিক লাগতেও পারে।