অবশেষে ভয়ঙ্কর এক অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করলেন ব্রাজিলের রোনালদো। ১৯৯৮-এর ফ্রান্স বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে স্বাগতিকরা। ফ্রান্সের হয়ে দু’টি গোল করেন কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান। ওই ফাইনালের আগে রোনালদোর ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যায় বলে জানালেন তিনি। সেদিন তিনি হাসপাতাল থেকে সরাসরি ফাইনাল খেলতে মাঠে উপস্থিত হয়েছিলেন। চার থেকে পাঁচ মিনিট পৃথিবীতে কি ঘটছে তার কিছুই তিনি বুঝতে পারেননি রোনালদো। সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ১৬ বছর আগের সেই ঘটনা বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘ফাইনাল ম্যাচ ছিল সন্ধ্যায়। দুপুরে খাওয়ার পরই আমি অসুস্থতা বোধ করি। কি হচ্ছিল, নিজেই বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ সারা শরীরে খিঁচুনি শুরু হয়। হাত-পা সব কাঁপতে থাকে। এমন ঘটনা কখনও আমার হয়নি। বুঝতে পারছিলাম না- কি করবো। চার-পাঁচ মিনিটের জন্য আমি পুরো অচেতন হয়ে গেলাম। আমার চারপাশে কি ঘটছিল কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। একটু পর স্বাভাবিক হলাম। কিন্তু কেউ বুঝতে পারছিল না- কেন এমন হচ্ছে। আসলে এখনও বুঝতে পারি না সেটা ফাইনালের আগে চাপ নাকি অন্য কোন কারণে ছিল।’ রোনালদো পরের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমাকে টিম ডাক্তার আলাদা রুমে ডেকে নিয়ে গেলেন। বললেন, তোমার খিঁচুনি রোগ হয়েছে। ফাইনালে খেলতে পারবে না।’ আমি বললাম, ‘এটা অসম্ভব। আমি খেলতে চাই। আমি খেলবো।’ এ কথা বলার পর ডাক্তার আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। তিন ঘণ্টা ধরে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলো। একসময় আমি সব জিনিসের স্বাদ ও গন্ধ বুঝতে পারলাম। এরপর হাসপাতাল থেকে বের হয়ে সরাসরি স্টেডিয়ামে চলে গেলাম। এতক্ষণ মনে করছিলাম, আমি এবার খেলতে পারবো। মাঠে এসে কোচ মারিও জাগালোকে বললাম, ‘আমি পুরোপুরি সুস্থ। আমি মাঠে নামবো।’ তিনি বলেলেন, ‘ডাক্তার যা বলে তাই হবে।’ ডাক্তার এলেন। কিন্তু আমাকে মাঠে নামার অনুমতি দিলেন না। তখন চিৎকার করে বললাম, ‘আমি শিশু নই। আমি সব কিছু বুঝি। আমি সুস্থ। আমি মাঠে নামবো।’ এ কথা বলার পর তারা আমাকে মাঠে নামার অনুমতি দিলেন। রোনালদো বলেন, ‘সেদিন মাঠে অন্যদিনের মতোই স্বাভবিক ছিলাম। ফাইনালের হেরেছি বলে অসুস্থতাকে দোষ দেব না। সব কিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু দিনটা ছিল ফ্রান্সের। দিনটা ছিল জিদানের।’