২০২২ সালের বিশ্বকাপ কাতারে আয়োজন নিয়ে বৃটিশ মিডিয়ার সমালোচনার অন্য জবাব দিলেন বিশ্ব ফুটবল সংস্থা ফিফা প্রধান সেপ ব্লাটার। গতকাল ফিফা সভাপতি বলেন, কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে বৃটিশ মিডিয়া বর্ণবাদী ও বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। এসময় ব্লাটার বলেন, ফিফাকে অকার্যকর করে দেয়ার চক্রান্ত চলছে এ মুহূর্তে। ঘুষ দিয়ে কাতার ২০২২-এর বিশ্বকাপ আয়োজনের যোগ্যতা পেয়েছে- এমন অভিযোগ আয়োজক নির্বাচনের পর থেকেই। একই অভিযোগে ইতিমধ্যে এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি কাতারের মোহাম্মদ বিন হাম্মামকে ফুটবলে আজীবন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফার এথিক কমিটি। তবে সর্বশেষ ঘটনায় বেকায়দায় রয়েছে ফিফা। এ নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছে ফিফার শীর্ষ স্পনসর প্রতিষ্ঠানগুলো। গতকাল সেপ ব্লাটার বলেন, কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে ফিফার সমালোচনা উঠছে আবারও। দুঃখজনক হলেও সত্যি, বর্ণবাদী ও বৈষম্যমূলক কারণেই কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে কথা উঠছে বারবার। এটা আমাকে ব্যথিত করছে। বৃটিশ সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে কেমন খবর ছাপছে তা চোখে পরছে আমার। এর নেপথ্য কারণ জানা নেই আমার। তবে আমরা একতা ধরে রাখতে চাই। আমি মনে করি কেউ কেউ ফিফাকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে। আমি বলছি না তারা ফুটবলকে ধ্বংস করতে চায়। তবে এর অভিভাবক সংস্থা ফিফার অস্তিত্ব রাখতে চায় না তারা। তবে আমিও বলে দিতে চাই, ফিফা খুবই শক্তিশালী ও একতাবদ্ধ একটি সংস্থা। কোন কিছুই একে ধ্বংস করতে পারবে না। মিডিয়া জানাচ্ছে, আগামী বছর ফিফার পরবর্তী সভাপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে ৭৮ বছরের সেপ ব্ল্যাটার ইতিমধ্যে শুরু করেছেন নতুন তৎপরতা। আগামী মেয়াদের নির্বাচনে যাওয়ার ইচ্ছা ফিফার এ টানা ১৬ বছরের সভাপতির। আর দুই মহাদেশীয় সংস্থা এশিয়া ও আফ্রিকান ফুটবল কনফেডারেশন এতে ব্লাটারের প্রধান টার্গেট। এবারের ব্রাজিল বিশ্বকাপ থেকে ফিফার আয় হবে ২.৬ বিলিয়ন পাউন্ড। ২০১০’র ঘোষণা অনুযায়ী এবারের বিশ্বকাপ শেষে প্রত্যেক সদস্য দেশের বোনাস হিসেবে পাওয়ার কথা ১৫০০০০ পাউন্ড। তবে ২০১১ সালে গত সভাপতি নির্বাচনের আগে বোনাসের এ অঙ্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দেন সেপ ব্লাটার। চার মাস পর নতুন মেয়াদে ফের ফিফা সভাপতির আসন গ্রহণ করেন এ সুইস ফুটবল সংগঠক। সভাপতি পদে বয়স ও নির্দিষ্ট মেয়াদ বেঁধে দেয়ার দাবি উঠেছিল সর্বশেষ ফিফা কংগ্রেসেও। সামনের সপ্তাহে এবারের ফিফা কংগ্রেস বৈঠকে বসার আগে ব্লাটার এ নিয়ে আরেকবার জানালেন তার দ্বিমত। ব্লাটার বলেন, বয়সের কারণে কারও পদ কেড়ে নেয়ার চিন্তাটা বৈষম্যমূলক। ২০১৮ ও ২০২২-এ বিশ্বকাপ আয়োজক নির্বাচনে দুর্নীতি নিয়ে গত সপ্তায় বিষদ প্রতিবেদন ছাপে বার্তা সংস্থা বিবিসি ও দৈনিক সানডে টাইমস। পরে ফিফার শীর্ষ চার স্পনসর সনি, ভিসা, এডিডাস ও কোকাকোলার তদন্ত চেয়ে একযোগে চিঠি দেয় ফিফাকে। প্রধান ৬ স্পনসরের পঞ্চম প্রতিষ্ঠান হুন্দাই একই তদন্ত চেয়ে ফিফাকে চিঠি দিয়েছে গতকাল।