বিশ্বজয়ী স্পেনকে ভেঙে চুরমার করল ডাচরা

roben-2-311x186গত বিশ্বকাপের ফাইনালে স্পেনের কাছে হারের ইতিহাসটা ভোলার কথা নয় নেদারল্যান্ডসের। ওই হারই চরম আরাধ্য শিরোপাটা হাতে নিয়ে ধরতে দেয়নি স্নেইডারদের। এর মধ্যে পেরিয়ে গেছে চার চারটি বছর। প্রতিশোধের তাড়না তাতে একটুও কমেনি ডাচদের। স্পেনকে ৫-১ গোলের আগুনে পুড়িয়ে তাই তৃপ্তির প্রতিশোধই নিয়ে ডাচরা এখন নিরুর বাঁশি বাজাতেই পারে।

বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই স্পেনকে সামনে পাওয়াই হয়তো প্রেরণা ছিলো নেদারল্যান্ডসের। ম্যাচটা তাই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দিয়েই শুরু হয়। বিশ্বজয়ীদের এ রকম নাস্তানাবুদ হওয়ার ইতিহাস ফুটবল বিশ্বকাপে আছে কিনা, সেটা এখন রেকর্ড ঘেঁটে দেখতে হবে।

আট মিনিটের সময় এগিয়ে যেতে পারতো বর্তমান রানার্সআপরা। কিন্তু চীনের প্রাচীরের দৃঢ়তা নিয়ে স্পেনের গোলবার যে সামলান ইকার ক্যাসিয়াস, তাকে ফাঁকি দেওয়াটা কি এতোই সহজ! না, সহজ নয়।

সহজ না বলেই তাকে একা পেয়েও গোলবঞ্চিত হয় নেদারল্যান্ডস। স্নেইডারের শট ঠেকিয়ে দেন স্পেনের অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াস। তারপরও অবশ্য দমে যায়নি ডাচরা। একের পর আক্রমণের সুনামি রচনা করেই গেছে তারা। তাতেই পুরো দমে জেগে উঠেছে স্পেন। ফলে আক্রমণের কথা ভুলে কিছু সময়ের জন্য আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে তারা। এরই এক পর্যায়ে, ম্যাচের ২৭ মিনিটে প্যানাল্টি পায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সুযোগ কাজে লাগাতে কোনো ভুলই করেননি জাবি আলোনসো।

ম্যাচে স্পেনের আধিপত্যের গল্পটাও শেষ হয়ে যায় ওখানেই। ২৭ মিনিটে হজম করা গোল প্রথমার্ধেই ফিরিয়ে দেয় নেদারল্যান্ডস। ৪৪ মিনিটে ভ্যান পার্সির গোলে সমতা ফেরায় তারা। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে নেদারল্যান্ডসকে এগিয়ে দেন তাদের বহু যুদ্ধের পরীক্ষিত সেনা রোবেন। ১১ মিনিট পর, ৬৪ মিনিটে কর্নার কিকে হেড দিয়ে গোল করেন ভিরিজ। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তার প্রথম গোলে ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় ডাচরা।

এরপর ৭২ মিনিটের নিজের দ্বিতীয় গোল করেন পার্সি। সে এক দেখার মতো গোল। ক্যাসিয়াস যেন বল নয়, বোকা বনে গিয়ে গোলবার ছেড়ে এসে তখন তিনি মাছ ধরতে নেমেছিলেন। ৮০ মিনিটে দ্বিতীয় দুর্দান্ত গোল করেন রোবেনও, এক রকম একার চেষ্টাতেই। এ দুজনের জোড়া গোল নেদারল্যান্ডসের বড় জয় সুনিশ্চিত করে। অন্যদিকে স্পেনিশ দূর্গ ততক্ষণে ভেঙে চুরমার। গ্যালারির দর্শকরা কেউ কাঁদছেন তো, কেউ গালে হাত দিয়ে বসে আছেন। কোচ ভিসেন্তে দেল বস্কের চোখের কোণেতেও তখন জল চিকচিক করতে দেখা গেল।

ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিট গোল বাঁচানোর জন্যই লড়তে থাকে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন? হ্যা, স্পেন তো এখনো বিশ্বচ্যাম্পিয়নই! বিশেষ করে আগামী ১৩ জুলাই পর্যন্ত তারাই তো চ্যাম্পিয়নের তকমাধারী। কিন্তু যে অগোছালো খেলাটা এদিন স্পেন সমর্থকদের তারা উপহার দিল তাতে এই তকমাটা তাদের সাথে বড়ই বেমানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *