সময়মতো বাজেট বাস্তবায়িত না হলে জনগণ হতাশ হবে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
একই সঙ্গে বাজেটের আইনি ভিত্তি থাকলেও পরিকল্পনার কোনো আইনি ভিত্তি নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার সকালে রাজধানীর লেকশো’র হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০১৪-১৫ পর্যালোচনা’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সরকারের অভিলাসী বাজেট সম্পর্কে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অভিলাস থাকা কাম্য। কিন্তু যেখানে যেটা থাকা উচিত সেখানে সেটা থাকা দরকার। বাজেট আর পরিকল্পনা এক নয়।
বাজেটের ভীত শক্তিশালী না হলে বাজার একটি মিশ্র সংকেত পাবে। উন্নয়ন প্রশাসন এতে গা লাগাবে না। বিদেশিরা একে গ্রহণ ও বিনিয়োগ করবে না। সময়মতো বাজেট বাস্তবায়িত না হলে জনগণ তখন হতাশ হবে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরো বলেন, অভিলাসকে দেশপ্রেমের সঙ্গে এক করে দেখানো হচ্ছে। যে যতো বেশি অভিলাস করতে পারি, সে ততো বেশি দেশপ্রেমিক হয়ে গেছি।
পরিকল্পনা ও বাজেট দুইটি দুই জিনিস উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাজেট তৈরি হয় বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে। এখানে অভিলাস কাম্য নয়। তবে কেউ কেউ অভিলাসের জায়গাকে রুপকল্পের (পরিকল্পনা) সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন।
পরিকল্পনাতে অভিলাস থাকা দোষণীয় ব্যাপার নয়। বাজেট আর পরিকল্পনা এক জিনিস নয়। বাজেটের সঙ্গে পরিকল্পনাকে গুলিয়ে ফেললে বাজেটের উদ্দেশ্য নষ্ট হয়ে যায়।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, পরিকল্পনা আর বাস্তবভিত্তিক বাজেট না হওয়ায় গত তিন অর্থবছরের বাজেটের অর্থায়নের সঙ্গে যে প্রাক্কলন করা হয়েছে তার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। এ কারণে প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় না।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রকল্পের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, পরিকল্পনা আর বাস্তব বাজেটের মধ্যে ফারাক থাকায় প্রায় ৩০টি প্রকল্পে প্রায় এক কোটি টাকা নামমাত্র ছুঁইয়ে দিয়ে প্রকল্পগুলো রাখা হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রকল্প ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অর্থ বরাদ্দ না থাকায় শেষ হয়নি। এর কারণ হলো অতিরিক্ত প্রকল্প বাড়ানো।
তিনি বলেন, বাজেটের একটি আইনি ভিত্তি আছে কিন্তু পরিকল্পনার কোনো আইনি ভিত্তি নেই। পরিকল্পনা সংসদে আলোচনা ও পাস হয় না। পরিকল্পনায় শৃঙ্খলা না রাখলে সম্পূরক বাজেটের পরিমাণ বেড়ে যাবে।
সিপিডি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ প্রমূখ। –