ভারতের নুতন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের আসন্ন ঢাকা সফর নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে ঢাকা। এ ব্যস্ততার ঢেউ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ছাড়িয়ে অন্যান্য মন্ত্রণালয়েও লেগেছে।
আলোচনার বিষয়বস্তু নির্ধারণে বৈঠক করছে সংশ্লিষ্ট সব ক’টি মন্ত্রণালয়। সতর্ক সরকারের উচ্চ মহলও। এমনকি ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তারাও নিয়মিত যোগাযোগ করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয় আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আয়োজিত এ বৈঠকে বাণিজ্য, নৌ-পরিবহন, পানি সম্পদসহ ভারতের সঙ্গে স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় অংশ নেয় বলে জানায় সূত্র।
আগামী ২৫ জুন বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে সুষমা স্বরাজের।
এ উপলক্ষে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যায়। মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকের (দক্ষিণ এশিয়া) কক্ষে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে অংশ নেন তারা।
বৈঠকে সফরের খুঁটিনাটি আলোচনাকালে সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলতে সুষমা স্বরাজের মনোভাবের কথা ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয় বলে জানা যায়।
ক্ষমতায় আসার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম বিদেশ সফর ঢাকা দিয়ে শুরু করবেন বলে শোনা যায়। বাস্তবে তা হয়নি। মোদীর পরিবর্তে ঢাকা আসছেন তার সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
দুই দেশের সম্পর্ক আরো এগিয়ে নিতেই তার এ সফর, বলছে দুদেশেই। মোদী সরকারের পক্ষ থেকে সুষমা স্বরাজ শেখ হাসিনার হাতে ভারত সফরের জন্য আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করবেন বলেও জানায় নির্ভরযোগ্য সূত্র।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় কোনো ত্রুটি রাখতে চায় না বাংলাদেশ। তাই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ ও আলোচনা। ভারতও আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বাংলাদেশকে এরই মধ্যে জানিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সাথে সুষমার সাক্ষাতের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
সূত্র বলছে, দুই দেশই পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ দেখাচ্ছে। বাংলাদেশের তরফ থেকে বাণিজ্য বাড়ানো এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও গতিশীল করার আগ্রহের কথা জানানো হবে। পাশাপাশি তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি ও স্থল সীমান্ত চুক্তিকে লোকসভায় অনুমোদনের প্রস্তাব রাখা হবে সুষমার কাছে।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে অংশ নেওয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিনিধি (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ভারতের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা আসছেন।
বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ভারতের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের সম্পর্ক যে মাত্রা পায়, তা আরো উচ্চতায় নিতে উদ্যোগী দু’দেশ। সেসব বিষয় আলোচনায় আনতে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় আলোচনা করছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দু’দেশের বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে উদ্যোগী হবে।
তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভারত বাংলাদেশের কাছে ইলিশ চেয় আসছে। সে বিষয়টিও আলোচনায় উঠতে পারে। এর বিনিময়ে বাংলাদেশও ভারতের কাছে বিশেষ সুবিধা চাইবে বলে জানান তিনি।