ব্রাজিলের বৃহত্তম শহর সাও পাওলোতে সরকারবিরোধী একটি বিক্ষোভ সহিংসতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা গাড়ি ও ব্যাংক ভাংচুর করার সময় পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করলে প্রতিবাদকারীরা সহিংস হয়ে ওঠে।
বৃহস্পতিবার সাও পাওলোর এক অংশে এ ঘটনা চলার সময় ২৫ কিলোমিটার দূরে অপর অংশে ইংল্যান্ড ও উরুগুয়ের মধ্যে বিশ্বকাপের খেলা চলছিল বলে বিবিসি জানায়।
এক বছর আগে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর একটি সরকারি সিদ্ধান্ত গণবিক্ষোভের মুখে বাতিল করা হয়েছিল। ওই ঘটনার এক বছর পূর্তিতে প্রায় ১৩শ’ মানুষ শান্তিপূর্ণ একটি মিছিল শুরু করে।
কিন্তু মিছিলের এক পর্যায়ে মিছিলকারী মধ্যে কয়েকজন দোকানপাটের সামনের অংশে ভাংচুর শুরু করে অগ্নিসংযোগ করে। টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, একদল মুখোশ পরা লোক গাড়িতে রঙ স্প্রে করছে, পটকা নিক্ষেপ করে জনসাধারণের সম্পদ বিনষ্ট করছে।
এদের প্রতিরোধ করতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়। উরুগুয়ে-ইংল্যান্ড খেলা শেষে পরিস্থিতি সহিংস আকার ধারণ করে।
প্রাথমিকভাবে কোনো প্রতিবাদকারীর আহত হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি এবং আটককৃতদের মধ্যে বিদেশি কোনো ফুটবলভক্ত নেই বলে জানিয়েছেন সাও পাওলো পুলিশের এক মুখপাত্র।
বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই এক বছর আগে পরিবহন ভাড়া ১০ সেন্ট বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্ত ঠেকিয়ে দেয়ায় নিজেদের কৃতিত্ব জাহির করে স্লোগান দিচ্ছিল। এরই মধ্যে ছোট একটি অংশ বিশ্বকাপবিরোধী স্লোগান দেয়।
আনা নামের এক বিক্ষোভকারী বলেছেন, “আজকের প্রতিবাদ বিশ্বকাপের বিরুদ্ধে না, এক বছর আগে যা হয়েছিল তার স্মরণে। এক বছর আগে আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম তা প্রদর্শন করতেই আজ আমরা রাস্তায় নেমেছি। পাশাপাশি আমাদের মূল লক্ষ্য, গণপরিবহন সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানানোর বিষয়টিও আছে।”
বিক্ষোভকারীদের কারণে শহরে অন্যতম একটি প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি থাকায় শহরে এর প্রভাব তেমন একটা পড়েনি।
বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে গতমাসে ব্রাজিলজুড়ে বিভিন্ন গণঅসন্তোষের কারণে সরকার বিরোধী বিক্ষোভের ঢেউ বয়ে যায়। এসব বিক্ষোভে ব্রাজিলবাসী দুর্বল জনসেবা, দুর্নীতি এবং বিশ্বকাপের মতো বিশাল আয়োজনে অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে সরকারের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেন।