এজলাসকক্ষে আসন নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারকরা।
মঙ্গলবার সকাল এগারোটার পরে একে একে ট্রাইব্যুনালে আসেন চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।
বর্তমানে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের অামির মতিউর রহমান নিজামীর অসুস্থতার কারণে তার মামলার রায় ঘোষণা করা যায় কিনা- সে বিষয়ে শুনানি চলছে। শুনানি করছেন প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী।
এর আগে নিজামী অসুস্থ বলে জানায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ। তারা নিজামীকে হাজির করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে নিজামীর অসুস্থতার কথা বলে ট্রাইব্যুনালের কাছে চিঠি পৌঁছায় কারা কর্তৃপক্ষ। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. লাভলু ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মো. নাসিরউদ্দিনকে কারা কর্তৃপক্ষের ওই চিঠি হস্তান্তর করেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাত বারটার দিকে কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন নিজামী। ফলে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না।
তাকে চিকিৎসকের পরামর্শে কারাগারের ভেতরে মেডিকেল সুবিধায় পূর্ণ বিশ্রামে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ফরমান আলী।
তিনি জানান, সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন নিজামী। তিনি মারাত্মক উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন।
এ অবস্থায় রাতেই নিজামীকে জেল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব চিকিৎসক ডেকে পরীক্ষা করানো হয় ও চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হলে সকাল ৮টায় তাকে আরও একবার চিকিৎসক দেখেন এবং পূর্ণ বিশ্রামে রাখার পরামর্শ দেন।
চিকিৎসকের পরামর্শেই মতিউর রহমান নিজামীকে ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়নি, বলেন ফরমান আলী।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ও আসাদ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, কোনো অভিযুক্ত গ্রেফতার থাকলে তার উপস্থিতিতেই রায় পড়ে শোনাতে হয়। গ্রেফতারকৃত আসামির অনুপস্থিতিতে রায় পড়ার বিধান নেই।
তবে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বলেও জানান তারা।
এদিকে প্রসিকিউশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন’১৯৭৩ অনুসারে আসামির অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণার বিধান রয়েছে।
তবে প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, সাধারণত আটক থাকা আসামির অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয় না। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ২৪ মার্চ মামলাটির যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন ট্রাইব্যুনাল।