মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এমএইচ৩৭০ আকাশে থাকা অবস্থায় বিধ্বস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরও বিমানটি বেশ কয়েক ঘণ্টা আকাশে উড়েছে। এরপর জ্বালানি-সংকটের কারণে বিমানটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে নিমজ্জিত হয়। গত ৮ মার্চ নিখোঁজ হওয়া মালয়েশিয়ার বিমানটি সম্পর্কে তদন্তকারীরা এমনভাবেই উপসংহার টেনেছেন।
এমন উপসংহারে পৌঁছানোয় এখন আরও সুনির্দিষ্ট এলাকায় তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে বলে আজ মঙ্গলবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার সামরিক রাডারে পাওয়া তথ্য পুনরায় বিশ্লেষণ করে তদন্তকারীরা এমন উপসংহার টেনেছেন বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রাডারের তথ্যে দেখা গেছে, ২৩৯ জন যাত্রীবাহী বিমানটি তার নির্ধারিত পথ থাইল্যান্ড উপসাগর ধরে এগোচ্ছিল। এরপর মালয়েশিয়ার উপদ্বীপ হয়ে বিমানটি মালাক্কা প্রণালিতে যায়। ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে গিয়ে বিমানটি রাডার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পর প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিমানটি সর্বোচ্চ ৪৩ হাজার ১০০ ফুট উচ্চতায় যাওয়ার কথা থাকলেও এটি ৪৫ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়ছিল। মালয়েশিয়ার পর্বতের কাছাকাছি এসে বিমানটি আকস্মিকভাবে বেশ নিচু দিয়ে চলছিল। মালাক্কা প্রণালির এখানে বিমানটি ২৩ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়ে।
তবে আন্তর্জাতিক সমন্বিত পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রাডার থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যে বিমানটি যে উচ্চতায় উড়ছিল বলে বলা হচ্ছে, তা অবিশ্বাস্য। এই তথ্যের ভিত্তিতে বিমানটি কত উচ্চতায় উড়ছিল, তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। নিখোঁজ বিমানটি তল্লাশি কার্যক্রমের সমন্বয়কারী ও অস্ট্রেলিয়ায় সাবেক সামরিক কর্মকর্তা অ্যানগুস হিউস্টন এ তথ্য জানান।
হিউস্টনের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ট্রান্সপোর্ট সেফটি ব্যুরোর প্রধান কমিশনার মার্টিন ডোলান। তিনি বলেন, বিমানটি কত উচ্চতায় উড়ছিল, এ ব্যাপারে বিশ্বাসযোগ্য কিছু নেই।
বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে একেকজন একেক দাবি নিয়ে হাজির হন। কেউ বলেন, বিমানের মধ্যে থাকা প্রশিক্ষিত কেউ নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে অজ্ঞাত স্থানে বিমানটি নিয়ে গেছে। আবার কারও মত, পাইলট আত্মহত্যা করায় বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়েছে। অনেকের ধারণা, বিষণ্ন পাইলট ক্রু ও যাত্রীসহ সবাইকে নিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো দাবিই প্রমাণিত হয়নি। এখনো রহস্যে ঘেরা বিমানটিতে আসলে কী ঘটেছিল।