সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফরকে ‘চমত্কার সূচনা’ হিসেবে দেখছে দিল্লি

susoma-indiaবাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে ভারতের নতুন সরকারের পক্ষ থেকে সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফরকে ‘চমত্কার সূচনা’ হিসেবে দেখছে দিল্লি। বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় ভারত। তবে বাংলাদেশের জনগণকেই নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান করতে হবে।
আজ শুক্রবার দুপুরে সুষমা স্বরাজ ঢাকা ছাড়ার আগে বিমানবন্দরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দীন সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।
তিন দিনের সফর শেষে আজ দুপুরে দিল্লি ফিরে গেছেন সুষমা স্বরাজ। বিমানবন্দরে তাঁকে বিদায় জানান পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক।
আজ সকালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হোটেল সোনারগাঁওয়ে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সৌজন্যসাক্ষাত্ করেন। খালেদা জিয়া আলোচনার একপর্যায়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র অনুপস্থিত বলে সুষমা স্বরাজের কাছে উল্লেখ করেন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারত প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে গণতন্ত্র দেখতে চায় কি না, সেটি সুষমা স্বরাজের কাছে জানতে চান খালেদা জিয়া।

বিএনপির নেতার সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে, জানতে চাইলে সৈয়দ আকবরউদ্দীন সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকার ও সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিরা ভারতের সঙ্গে আরও বন্ধুত্ব, ব্যাপক সহযোগিতা ও যোগাযোগ রাখতে আগ্রহী। এই উপলব্ধি নিয়ে আমরা ফিরে যাচ্ছি। আজ প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা, রওশন এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর এ উপলব্ধি হয়েছে।’

সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফরকে ‘চমত্কার সূচনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, একে অন্যের উদ্বেগ দূর করা এবং একে অন্যের প্রতি সুপ্রতিবেশীসুলভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে ব্যাপক আকাঙ্ক্ষা চোখে পড়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করার ব্যাপারে আশাবাদী বলে আকবরউদ্দীন সাংবাদিকদের অবহিত করেন।

ভারতের নতুন সরকার পূর্ণ মেয়াদে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রস্তুত কি না, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সরকার কাজ করে সরকারের সঙ্গে। ভারতের সরকার বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে কাজ করবে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো এ দেশের জনগণকেই সমাধান করতে হবে।’

ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রার্থনা: সফরের শেষ দিনের শুরুতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যান সুষমা। সেখানে বাংলাদেশ-ভারত সুসম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে প্রার্থনা করেন তিনি। এ সময় ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নাটমন্দিরের সামনে ভক্তদের উদ্দেশে সুষমা স্বরাজ হিন্দিতে বক্তব্য দেন। যার অর্থ ‘ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। এ সম্পর্ক আরও জোরালো হবে। দুই দেশের সম্পর্কে যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে তা দূর করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব। খোলা মন নিয়ে বাংলাদেশে এসেছি। কোনো ভুল-বোঝাবুঝি থাকবে না।’
প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ও বোনের সাক্ষাত্: ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে পরে সুষমা স্বরাজ হোটেলে ফিরে আসেন। সকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে প্রথম সৌজন্যসাক্ষাত্ করতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল। এ সময় তাঁদের মধ্যে প্রায় আধা ঘণ্টা আলাপ হয়।
এরপর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্যসাক্ষাত্ করতে যান প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা মসিউর রহমান ও গওহর রিজভী। সবার শেষে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দেখা করেন খালেদা জিয়া। ঢাকা ছাড়ার আগে সুষমা স্বরাজ জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে তাঁর সংসদ ভবনের কার্যালয়ে দেখা করেন।
গত বুধবার রাতে তিন দিনের ‘শুভেচ্ছা সফরে’ ঢাকায় আসেন সুষমা স্বরাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *