1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
আল্লার মাল, বায়তুল মাল এবং আবদুল মালের নীতিকথা! - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
ওমরাহ পালনে সস্ত্রীক সৌদি যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল ৭৬ বছরের ইতিহাসে প্রথম, সারা দেশে টানা তাপপ্রবাহের রেকর্ড দেশে নয়, বিদেশে নির্জন দ্বীপে বসছে শাকিব খানের বিয়ের আসর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের উপ-অপ্যায়ন সম্পাদক হলেন সোহেল চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যপদ ফিরে পাচ্ছেন জায়েদ খান শাকিবের তৃতীয় বিয়ে, মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা সোনার দাম আরও কমল রাজধানীতে পানি, স্যালাইন ও শরবত বিতরণ বিএনপির জায়েদ খানের এফডিসিতে ফেরা হবে কিনা, জানালেন ডিপজল কক্সবাজার জেলায় কত রোহিঙ্গা ভোটার, তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট সিনেমা হলে দেওয়া হচ্ছে টিকিটের সঙ্গে ফ্রি বিরিয়ানি ঢাকায় বড় জমায়েত করতে চায় বিএনপি ১৫ বছর পর নতুন গানে জেনস সুমন যশোরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ

আল্লার মাল, বায়তুল মাল এবং আবদুল মালের নীতিকথা!

  • Update Time : রবিবার, ৬ জুলাই, ২০১৪
  • ২৯৪ Time View

golam mawla roni
গোলাম মাওলা রনি

আল্লার মালের কথা বললেই আপনারা হয়তো স্মৃতিকাতর হয়ে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে খুঁজলেও খুঁজতে পারেন। আবদুল মালের কথা বললে স্মৃতিপটে ভেসে উঠতে পারে অদ্ভুত সব কর্মকাণ্ড কিংবা কথাবার্তার হাজারো উপাখ্যান, আর বায়তুল মাল শব্দটি বাকি দুটো শব্দমালার সঙ্গে একেবারেই বেমানান বলে মনে হতে পারে আপনাদের কারও কারও কাছে, বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে মোটামুটি একটু ঘাঁটাঘাঁটি করেন। আজ আমি অবশ্য রাজনীতি নিয়ে কিছু বলব না। আমি এ কথাও বলব না যে, রোজার মাসে এ দেশের রাজনীতি কীভাবে ধর্মকর্মের সঙ্গে নাফরমানি করছে। আমি বলব অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে, যা কিনা শিরোনামে ইতিমধ্যেই বর্ণনা করা হয়েছে।

আল্লার মাল, বায়তুল মাল এবং আবদুল মাল_ এ তিনটি শব্দমালাই ইসলামী তাহজীব এবং তমুদ্দুনের ভাষা। বিশ্বাসীরা মনে করেন, জমিনের সব ধন-সম্পত্তির মালিক প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। ফলে কোনো ধর্ম বিশ্বাসী মানুষ অঢেল ধন-সম্পত্তির অধিকারী হওয়ার পরও নিজেকে সেগুলোর মালিক মনে না করে হেফাজতকারী, তদারককারী কিংবা বড়জোর জিম্মাদার বলে মনে করে। ফলে তারা অহঙ্কার করে না। বরং কথায় কথায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। অন্যদিকে বায়তুল মাল বলতে বোঝায় রাষ্ট্রীয় কোষাগার। মূলত আল্লাহর রসুল (সা.) যখন মদিনা রাষ্ট্রের পত্তন ঘটালেন তখনই প্রথম এ শব্দটির সঙ্গে মুসলমানরা ব্যাপকভাবে পরিচিত হলো। পরবর্তীকালে খোলাফায়ে রাশেদিন, উমাইয়া খেলাফতের ৯০ বছর, আব্বাসীয় খেলাফতের প্রায় ৪০০ বছর রাষ্ট্রীয় কোষাগারের নাম ছিল বায়তুল মাল।

বায়তুল মালের প্রতিটি পয়সার জন্য আল্লাহর দরবারে শাসকবর্গকে কঠিন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। কোনো ওজর, আপত্তি বা নয়ছয় দিয়ে সেদিনের সেই বিচার মোকাবিলা করা যাবে না। একজন শাসকের জীবনের কোনো গুনাহ বা অন্যায়ই বায়তুল মালের খেয়ানতের চেয়ে বড় হবে না। অর্থাৎ শাসকের সবচেয়ে বড় গুনাহ হবে সরকারি তহবিলের যথেচ্ছ ব্যবহার বা তছরুপ। আর এ কারণেই সব দীনদার রাজা-বাদশাহ তাদের জীবনের বিনিময়েও সরকারি অর্থের একটি পয়সাও নষ্ট হতে দিতেন না। একবার হজরত ওমর (রা.) বায়তুল মালের কিছু অর্থ নিয়ে মসজিদে নববীর সামনে গরিব-মিসকিনদের মধ্যে বিতরণ করছিলেন। স্তূপাকারে সাজানো ছিল স্বর্ণমুদ্রা বা দিনার এবং রৌপ্য মুদ্রা বা দিরহাম। খলিফার শিশুকন্যা কৌতূহলবশত সেখানে এলেন এবং একটি দিরহাম নিয়ে দিলেন ভোঁ দৌড়। খলিফা শিশুটিকে ধরার জন্য তৎক্ষণাৎ এমনভাবে ছুটলেন, তার শরীরের চাদর কাঁধ থেকে পড়ে গেল। কন্যাটি পিতার এই রুদ্রমূর্তি এবং ব্যতিব্যস্ততা দেখে দৌড়াতে দৌড়াতে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়লেন এবং দিরহামটি মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে অঝোরে কাঁদতে লাগলেন। হজরত ওমর (রা.) কন্যার মুখে আঙ্গুলি ঢুকিয়ে দিয়ে দিরহামটি বের করে এনে যথাস্থানে রাখলেন এবং বললেন, হে লোক সব! এই মালের ওপর ওমর এবং তার সন্তানদের ততটুকুই অধিকার রয়েছে যতটুকু রয়েছে এই রাজধানী বা দেশের সীমান্তের নিতান্ত দরিদ্র একজন মানুষের।

হজরত আবু মুসা আশআরী (রা.) একবার বায়তুল মাল ঝাড়ু দিলেন এবং পারিশ্রমিক হিসেবে একটি দিরহাম পেলেন। তিনি বায়তুল মাল থেকে বের হওয়ার পথে দেখলেন খলিফাতুল মুসলেমিন হজরত ওমর (রা.)-এর একজন বালকপুত্র সেখানে ঘোরাফেরা করছে। তিনি স্নেহ পরবশ হয়ে বালকটিকে কাছে ডেকে নিলেন এবং দিরহামটি দিয়ে দিলেন। হজরত ওমর (রা.) ছেলের হাতে দিরহাম দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, কোথায় পেলে? পুত্র বলল, আবু মুসা আমাকে দিয়েছেন। তারপর খলিফা আবু মুসা আশআরীকে (রা.) তলব করে আনলেন এবং বললেন হে মুসা! তুমি তোমার অর্জিত সম্পদটি ব্যয় করতে গিয়ে তোমার নিজের বিবেক, বুদ্ধি এবং মদিনার দরিদ্র মানুষজনের প্রতি জুলুম করেছ। এই দিরহামটি আমার শিশুপুত্রকে দান করার সময় তোমার কি একবারও মনে হয়নি, মদিনায় খলিফা ওমরের চেয়েও অসহায়, দরিদ্র এবং অভাবী লোকজন রয়েছে? এরপর তিনি দিরহামটি পুত্রের কাছ থেকে নিয়ে বায়তুল মালে জমা দিয়ে দিলেন এবং আবু মুসাকে পুনরায় বললেন, তোমার দরকার নেই বলেই দিরহামটি আমার ছেলেকে দান করেছ। আবার ওটি আমার দরকার নেই বলেই পুনরায় বায়তুল মালে ফেরত দিলাম এই আশায় যে, হয়তো আল্লাহর রসুল (সা.)-এর কোনো অধিকতর দরিদ্র উম্মতের অধিকতর প্রয়োজনে সেটি ব্যবহৃত হবে।

এবার আমি কিছু বলার চেষ্টা করব আবদুল মাল সম্পর্কে। আরবিতে আবদ, আবদুল ইত্যাদি সাধারণত ব্যবহৃত হয় চাকর, ভৃত্য, কৃতদাসকে বোঝানোর জন্য। যেমন আবদুল মোত্তালিব অর্থাৎ মোত্তালিবের চাকর। কিন্তু যদি কেবল আবদ বা আবদুল বলা হয় তখন সরল অর্থে মনে করা হয় আল্লাহর চাকর বা বান্দা। আবদুল মাল বলতে আমি আল্লাহর বান্দাদের ধন-সম্পদকে বোঝাতে চাচ্ছি। এবার শিরোনাম প্রসঙ্গে আসি। রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় করে আল্লাহর বান্দাদের ইফতারি খাওয়ানোর নামে ইদানীং যা হচ্ছে, তা নিয়ে কিছু কথা বলেই অন্য প্রসঙ্গে চলে যাব।

বঙ্গভবন, গণভবন, সরকারি দফতরসহ প্রভৃতি স্থানে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে প্রতি বছরই সরকারি অর্থ ব্যয়ে বিরাট বিরাট সব ইফতারির আয়োজন হয়। এতে কত শত কোটি টাকা খরচ হয় তা আমার জানা নেই। তেমনি জানা নেই এসব অনুষ্ঠান কেন এবং কী কারণে করা হয়। অভ্যাগতরা আলেম না কামেল না ফাজেল কিংবা জালেম তা কখনো আয়োজকরা ভেবে দেখেন না। অন্যদিকে ইফতার মাহফিলে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান দলবেঁধে সরকারি খরচে উদরপুর্তির আগে আল্লাহ-রসুল কোরান-হাদিসের কোনো ভেদ ব্যাখ্যা না শুনে তাদের নেতানেত্রী বা আমন্ত্রণকারী কর্তাদের বক্তব্য শুনতে থাকেন। এতে আয়োজনকারী এবং আগমনকারী উভয়কেই আল্লাহর দরবারে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে। এভাবে ব্যক্তির পাপ বাড়তে বাড়তে সেই পাপের বোঝা এত বড় হয়ে যায় যে, পুরো জাতিকেই তার দায় মেটাতে হয়।

ইফতারি বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না বলে ইসলামী পণ্ডিতদের কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করলেই সম্মানীত পাঠকরা বুঝতে পারবেন আমি আসলে কি বলতে চেয়েছি! হজরত হোজায়ফা (রা.) তার ভক্তদের উদ্দেশে বললেন_ ফেতনার জায়গা থেকে দূরে থাক। তারা প্রশ্ন করলেন, হুজুর! ফেতনার জায়গাটি কি? তিনি বললেন, শাসকবর্গের দরজা। কারণ তোমরা সেখানে গিয়ে মিথ্যা কথার ফুলঝুরি দিয়ে তাদের সত্যবাদী বানিয়ে ফেল এবং তাদের মধ্যে যেসব গুণ আদৌ নেই, সেসব গুণ বর্ণনা করতে থাক। হজরত আবু যর (রা.) তার ভক্ত সালামাকে উপদেশ প্রদান প্রসঙ্গে বললেন, হে সালামা! বাদশাহদের দরজায় যেও না। যদি যাও, তবে তাদের কাছ থেকে তুমি যা পাবে, তার চেয়ে উত্তম এবং মূল্যবান বস্তু তারা তোমার চরিত্র, দীন এবং আখেরাতের সঞ্চয় থেকে নিয়ে নেবে।

হজরত সুফিয়ান সাওরী (রহ.) বলেন, দোযখে একটি উপত্যকা আছে, যাতে কেবল সেই কারিদের স্থান হবে, যারা বাদশাহের কাছে যাতায়াত করে এবং ধর্মকর্ম রেখে তোষামোদিতে মত্ত থাকে। যারা নিয়মিত ইবাদত বন্দেগি করেন এবং আল্লাহকে সর্বশক্তিমান মানেন তারা যদি সকাল-বিকাল শাসকবর্গের দরবারে ধরনা দিতে থাকেন, তবে তারচেয়ে বড় মোনাফেকি আর কিইবা হতে পারে! কোনো ব্যক্তি যদি কোনো সমাবেশ বা মজলিশে হাজির হয়ে কোনো সম্প্রদায়ের সংখ্যা বৃদ্ধি করে বা সেখানকার ভিড় বাড়ায় তবে লোকটি ওই সম্প্রদায়ভুক্ত বলে গণ্য হবে। এর অর্থ জালেমদের দল বৃদ্ধি করলে তাকে জালেমই বলা হবে। হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) এক ব্যক্তিকে কর্মচারী নিয়োগ করার পর জানতে পারলেন, সে লোকটি এক সময় কুখ্যাত হাজ্জাজ বিন ইউসুফের কর্মচারী ছিল। তিনি তৎক্ষণাৎ লোকটিকে বরখাস্ত করলেন। ক্ষতিগ্রস্ত লোকটি আরজ করল, হে আমিরুল মুমেনিন! আমি মাত্র অল্প কয়েক দিনের জন্য হাজ্জাজের কর্মচারী হয়েছিলাম। খলিফা উত্তর করলেন, তুমি যার অধীনে কর্মরত ছিলে তার সংসর্গে একদিন কিংবা কয়েক মুহূর্ত থাকাই অকল্যাণ ও অনর্থ সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট।

শাসকদের কাছে যাওয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাফরমানি বলে বিবেচিত হয় বিশেষত সেই শাসকের দরবারে, যিনি জোরপূর্বক ক্ষমতার মসনদ দখল করেছেন। তার কাছে যাওয়া জবরদখলকৃত ঘরে প্রবেশের মতোই হয়ে থাকে, আর জবরদখলকৃত ঘরে প্রবেশ করা নিঃসন্দেহে হারাম। রসুল করীম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জালেমের জন্য দীর্ঘায়ুর দোয়া করে, সে চায়, আল্লাহর দুনিয়ায় আল্লাহর নাফরমানি অব্যাহত থাকুক। কাজেই কোনো অতিরঞ্জিত দোয়া এবং তার প্রশংসা করা জায়েজ নয়। রসুল (সা.) বলেন, পাপাচারীর প্রশংসা করা হলে আল্লাহতায়ালা ক্রুদ্ধ হন। এক হাদিসে আছে, যে ফাসেকের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, সে ইসলামকে বিধ্বস্ত করতে সহায়তা করে। হজরত আবু সুফিয়ান সাওরীকে (রহ.) একজন প্রশ্ন করলেন_ এক জালেম জনশূন্য জঙ্গলে মরতে থাকলে তাকে পানি পান করানো উচিত কিনা? তিনি বললেন, না; তাকে মরতে দেওয়া উচিত। যে ব্যক্তি জালেমকে ভালোবাসে, সে যদি জুলুমের কারণে ভালোবাসে তবে গোনাহগার হবে। আর যদি অন্য কোনো কারণে ভালোবাসে তবে সে ওয়াজিব তরক করার জন্য পাপী হবে। প্রতিটি মানুষের জন্য ওয়াজিব হলো জালেমের সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করা।

আল্লাহর প্রিয় বান্দারা কীভাবে দুনিয়ার বড় বড় বাদশাদের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতেন এবং নির্ভয়ে সব কথা বলতেন তার একটি উদাহরণ দিয়ে আজকের লেখাটি শেষ করব। উমাইয়া শাসক হিশাম ইবনে আবদুল মালিক তখন মুসলিম জাহানের খলিফা। আজকের পুরো মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, সিন্ধু, সাইপ্রাস, স্পেন, মধ্য এশিয়ার কিয়দাংশ নিয়ে অর্ধ পৃথিবীর বাদশাহ তিনি। বাদশাহ হজ উপলক্ষে তখন মক্কায়। তিনি তার খাদেমদের ডেকে বললেন_ সাহাবিদের কেউ থাকলে তাকে আমার সামনে নিয়ে আস। লোকেরা বলল, ইয়া আমিরুল মুমেনিন! তারা তো সবাই ইন্তেকাল করে গেছেন। তিনি বললেন, তবে কোনো নামকরা তাবেয়িকে আন। সে মতে, খলিফার লোকজন হজরত তাউস ইয়ামনী (রহ.)-কে ডেকে আনল। তিনি হিশামের সামনে গিয়ে জুতা জোড়া খুললেন এবং আমিরুল মুমেনিন বলে সালাম না করে বললেন, হে হিশাম, সালামুন আলাইকা। তিনি তার কুনিয়ত (রাষ্ট্রীয় খেতাব বা উপাধি)। সালামের পর হেশামের ঠিক সামনে আসন গ্রহণ করে জিজ্ঞাসা করলেন, হে হিশাম, কেমন আছেন?

হজরত তাউস ইয়ামেনী (রহ.)-এর আচরণ ছিল প্রচলিত দরবারি প্রথা বা রাষ্ট্রাচারের সম্পূর্ণ বিপরীত। খলিফা রাগে থর থর করে কাঁপতে লাগলেন। এমনকি হজরত তাউসকে হত্যা করতে চাইলেন। লোকজন তাকে স্মরণ করিয়ে দিল যে, তিনি আল্লাহ ও রসুলের হেরেমে আছেন এবং এখানে কোনোক্রমেই হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। এরপর খলিফা রাগত স্বরে বললেন, হে তাউস, তুমি এহেন কর্ম করলে কেন। তিনি বললেন, আমি কি করেছি? এতে হিশামের ক্রোধ আরও বেড়ে গেল। তিনি পুনরায় বললেন, তুমি আমার সামনে জুতা জোড়া খুলেছ। আমার হস্ত চুম্বন করনি, আমাকে আমিরুল মুমেনিন বলে সালাম করনি। আমার কুনিয়ত উল্লেখ করনি। আমার মুখের সামনে আমার অনুমতি ছাড়াই আসন গ্রহণ করেছ এবং জিজ্ঞাসা করেছ_ হেশাম কেমন আছেন?

হজরত তাউস (রহ.) জওয়াবে বললেন, জুতা খোলার ব্যাপারটা হচ্ছে_ আমি দৈনিক পাঁচবার রব্বুল ইযযাত আল্লাহ পাকের সামনে জুতা খুলি। তিনি আমার প্রতি ক্রুদ্ধও হন না এবং আমাকে শাস্তিও দেন না। হস্ত চুম্বন না করার কারণ_ আমি হজরত আলী (রা.)-এর মুখ থেকে শুনেছি, পুরুষের জন্য কারও হস্ত চুম্বন করা জায়েজ নয়। তবে স্বামী কামবশত স্ত্রীর হস্ত আর পিতা স্নেহবশত সন্তানের হস্ত চুম্বন করতে পারে। আমি আমিরুল মুমেনিন বলে আপনাকে সালাম করিনি কারণ_ সব মানুষ আপনার শাসন ক্ষমতা লাভে সন্তুষ্ট নয়; তাই আমি মিথ্যা বলাটা পছন্দ করিনি। কুনিয়ত উল্লেখ না করার হেতু হচ্ছে_ স্বয়ং আল্লাহ তাঁর পয়গম্বরগণকে নাম ধরেই ডেকেছেন; কুনিয়ত সহকারে নয়। যেমন_ ইয়া দাউদ, ইয়া মুসা, ইয়া ঈসা। অন্যদিকে আল্লাহ খারাপ মানুষ এবং তার শত্রুদের কুনিয়ত উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাব্বাত ইয়াদা-আবী লাহাব’ (আবু লাহাবের হস্তদ্বয় নিপাত যাক)। আর সামনে বসার ব্যাপারে যে অভিযোগ করেছেন, সে ব্যাপারে আমি হজরত আলী (রা.)-কে বলতে শুনেছি_ জাহান্নামে পর্বত শৃঙ্গের মতো সাপ আর খচ্চরের অনুরূপ বিচ্ছু রয়েছে। এরা সেসব শাসককে দংশন করবে, যারা তাদের প্রজাদের প্রতি ইনসাফ করে না। এরপর হজরত তাউস (রহ.) সেখান থেকে দ্রুত প্রস্থান করলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com